যশোরে ‘রড চুরির অপবাদ’ দিয়ে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা

পিটিয়ে হত্যাপ্রতীকী ছবি

যশোর সদর উপজেলার সতিঘাটা গ্রামে রড চুরির অপবাদ দিয়ে ফয়জুল ইসলাম (৩০) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

ফয়জুল ইসলাম যশোর সদর উপজেলার সতিঘাটা তুলা গোলদারপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দীনের ছেলে। স্থানীয় একটি ইটের ভাটার শ্রমিক ছিলেন তিনি। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আজ দুপুরে একই পরিবারের চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সতিঘাটা গ্রামের আবদুল্লাহ (৬২), তাঁর দুই ছেলে আমির হামজা (৩০), রকিবুল হাসান (২২) এবং আবদুল্লাহর ট্রাক্টরের চালক সাব্বির মোল্লা (২৫)।

পুলিশ ও নিহত ফয়জুলের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রড চুরির অভিযোগে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে ফয়জুলকে ধরে আবদুল্লাহ ও তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁদের ওয়েল্ডিং কারখানার ভেতরে আটকে রেখে সারা রাত নির্যাতন করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ফেলে রাখা হয়। খবর পেয়ে ভোর চারটার দিকে ফয়জুলের বাবা জালাল উদ্দীন তাঁকে আনতে যান। কিন্তু ফয়জুলকে তাঁর বাবার কাছে দেওয়া হয়নি। এরপর খবর পেয়ে আজ বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফয়জুলকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ময়নাতদন্তের জন্য ফয়জুলের লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে ফয়জুলের বাবা জালাল উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে ইটভাটায় দিনমজুরের কাজ করত। রড চুরির অপবাদ দিয়ে রাত একটার দিকে আবদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি আমার ছেলেকে আটকে রাখে ও কয়েকজন মিলে হাতুড়ি, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে সারা রাত পিটিয়ে নির্যাতন করে। খবর পেয়ে আমি ভোর চারটার দিকে আবদুল্লাহর বাড়িতে ছেলেকে আনতে যাই। কিন্তু তারা পুলিশে দেবে বলে আমার কাছে দেয়নি। সকালে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ততক্ষণে আমার ছেলে মারা যায়।’

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, চুরির অভিযোগে আবদুল্লাহ ও তাঁর পরিবারের লোকজন পিটিয়ে ফয়জুলকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় আবদুল্লাহসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।