অস্বাভাবিক জোয়ারে নিঝুম দ্বীপের অনেক এলাকা প্লাবিত, বাসিন্দাদের দুর্ভোগ

অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়ক। রোববার দুপুর ১২টায়
ছবি: প্রথম আলো

অস্বাভাবিক জোয়ারে নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের অর্ধেকের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি উচ্চতায় জোয়ার বয়ে যাওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্লাবিত এলাকার অধিকাংশ রাস্তাঘাট দুই থেকে তিন ফুট পানির নিচে ডুবে গেছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা এলাকার বাসিন্দা জহির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরটিলা ঘাট থেকে নামারবাজার পর্যন্ত প্রধান সড়কটি তিন ফুট পানির নিচে ডুবে গেছে। এই সড়কে মোটরসাইকেল ও যাত্রীবাহী গাড়ি ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। কোথাও কোথাও চালকেরা মোটরসাইকেল নিয়ে হেঁটে যাতায়াত করছেন।

নিঝুম দ্বীপে ঘুরতে এসেছেন হাতিয়ার ওছখালী এলাকার কলেজছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি বলেন, জোয়ারের পানিতে নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়ক ডুবে গেছে। সড়কের ওপর দু-তিন ফুট পানি। এতে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। তিন দিন ধরে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকে পুরো সড়ক।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য কেফায়েত উল্যাহ বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ার স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হলে তলিয়ে যায় নিঝুম দ্বীপের অধিকাংশ ওয়ার্ড। কয়েক দিনে জোয়ারের পানি রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভেঙে গেছে প্রধান সড়কের অনেক জায়গা। জোয়ারের পানি নেমে গেলে দেখা যায়, সড়কে বিশাল বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। নিঝুম দ্বীপে ছোট-বড় ৫০টির বেশি মাছের খামার আছে। সব কটি খামার ডুবে গেছে। এতে ভেসে গেছে এসব খামারের লাখ লাখ টাকার মাছ।

তিন দিনের অস্বাভাবিক জোয়ারে দ্বীপের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিঝুম দ্বীপ ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল আফছার। তিনি আরও বলেন, একটু অস্বাভাবিক জোয়ার হলেই দ্বীপের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। আর বেশি জোয়ার হলে দ্বীপের প্রায় পুরোটা পানির নিচে থাকে। প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেক কাঁচা ঘরের মাটি সরে যাচ্ছে। এতে ঘরগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। তবে ইউপির পক্ষ থেকে এখনো ক্ষয়ক্ষতির কোনো তালিকা করা হয়নি। জোয়ারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

নোয়াখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এই সময় পূর্ণিমার কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি উচ্চতায় জোয়ার হচ্ছে। আর এতে প্লাবিত হচ্ছে লোকালয়।