সিদ্ধিরগঞ্জে তিতাসের গ্যাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ

তিতাসের গ্যাসের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে তিতাসের জ্বালানি গ্যাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়মিত বিল পরিশোধ করলেও দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস পাচ্ছেন না তাঁরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার গ্রাহক।

প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি গ্যাসের সংকট চলছে। গ্যাস–সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার গ্রাহককে। এতে ক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গ্যাসের দাবিতে মৌচাক এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন কয়েক শ নারী-পুরুষ। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভে স্থানীয় এলাকাবাসী সাইফুল ইসলাম, শাহজাহান মিয়া, বাচ্চু মিয়াসহ কয়েক শ মানুষ অংশ নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেন। মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা–পুলিশ গিয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিলে এলাকার লোকজন মহাসড়ক ছেড়ে দেন। এতে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া সাইফুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার গ্রাহক তিন বছর ধরে গ্যাস পাচ্ছেন না। গ্যাস না থাকায় লাকড়ি, গ্যাস সিলিন্ডারে রান্নার কাজ করতে হচ্ছে। গ্যাসের সমস্যা সমাধানে তিতাস গ্যাস অফিসকে লিখিতভাবে কয়েক দফা জানালেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অথচ গ্যাস না পেলেও তিতাসকে নিয়মিত বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে গ্যাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন এলাকার লোকজন।

মিজমিজি এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী আসমা বেগমের ছয়জনের সংসার। এক বছর ধরে গ্যাসের সংকটে ভুগছেন তাঁরা। মাঝেমধ্যে রাত ১২টার পর একটু গ্যাস এলেও তা আবার ভোরের আগেই চলে যায়। পাইপলাইনে গ্যাস না থাকায় প্রতি মাসে রান্নার কাজে সাড়ে ১২ কেজি ওজনের ২টি করে সিলিন্ডার লাগছে তাঁদের। এতে সংসারের খরচ বেড়েছে।

মহাসড়ক অবরোধের সত্যতা স্বীকার করে শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. শরফুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সকালে গ্যাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন এলাকাবাসী। তাঁরা ১০ থেকে ১৫ মিনিট মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন। হাইওয়ে পুলিশ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের যথাযথ অভিযোগ কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য বললে তাঁরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন এবং যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

তিন বছর ধরে গ্যাস–সংকটের অভিযোগ অস্বীকার করে তিতাস গ্যাস নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মামুনার রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের এই অভিযোগ সঠিক নয়। গ্যাস–সংকট সাময়িক সমস্যা। এলএনজি সরবরাহ ঘাটতির কারণে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, যেসব গ্রাহক দাবি করছেন তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস পাচ্ছেন না, তাঁদের তো গ্যাস–সংযোগ সারেন্ডার করার সুযোগ আছে। তাঁরা যদি চান গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নিতে পারেন, তাহলে তো তাঁদেরকে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে না।