দুই দফা দাবিতে শিক্ষকদের কর্মবিরতি কর্মসূচি অব্যাহত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

দুই দফা দাবিতে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতির কর্মবিরতি আজ মঙ্গলবার টানা সপ্তম দিনের মতো চলছে। শিক্ষকদের এ অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে উপাচার্যের ভার্চ্যুয়াল বৈঠক হয়েছে। তিনি আশা করছেন দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালা সংশোধন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে আইসিটি পার্ক স্থাপন না করার দাবিতে শিক্ষকেরা গত বুধবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অভিন্ন নীতিমালা নির্দেশিকাটি হুবহু গ্রহণ করার ব্যাপারে আপত্তি থাকা সত্ত্বেও রিজেন্ট বোর্ড তা অনুমোদন করেছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বল্প জমিতে আইসিটি পার্ক স্থাপনে আপত্তি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কর্মবিরতি শুরু করেছেন শিক্ষকেরা।

এতে আরও বলা হয়, ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালায় শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির বিভিন্ন শর্তের অস্পষ্টতা ও অসামঞ্জস্য থাকায় এবং অভিন্ন নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটির কোনো সুপারিশ গ্রহণ না করায় বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকেরা জরুরি সাধারণ সভায় নীতিমালাটি প্রত্যাখ্যান করেন।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু সালেহ প্রথম আলোকে বলেন, ইউজিসি যে নির্দেশিকা দিয়েছে, সেখানে কিছু অসংগতি রয়েছে। এগুলো সংশোধন করার পক্ষে তাঁরা। আইটি পার্ক সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আইটি পার্ক নির্মাণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রতিনিয়ত বহিরাগতরা আসবেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঝামেলা হবে। আইটি পার্কের বিপক্ষে নই। নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করে এখানে আইটি পার্ক নির্মাণ করা হোক।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতিরি সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, ‘আজ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির বৈঠক ছিল। আমরা যে বিষয়টা নিয়ে কর্মবিরতি পালন করছি, সে বিষয়টা উপাচার্য স্যার ভালোভাবে উপস্থাপন করছেন কি না বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী বলছেন, সেগুলোও জানার জন্যই আমরা ওই বৈঠকে ছিলাম। বৈঠকে আমাদের বিষয়টি মুখ্য ছিল। আমরা যে বিষয়গুলো সংশোধনের কথা বলেছি, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও আমলে নিয়েছে। আজ–কালকের মধ্যে উপাচার্য স্যার ইউজিসি থেকে একটি নির্দেশনা পাবেন।’

কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘ইউজিসি শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ে যে অভিন্ন নীতিমালার কথা বলেছে, আমরা এটা বিরোধিতা করছি না। আমরা বলছি যে নীতিগুলো কথা বলা হয়েছে, সেগুলো থাকুক। তবে এটা একটু সংশোধন করা হোক। সেই সংশোধনী চেয়ে রিজেন্ট বোর্ডে পাঠিয়েছিলাম। হয়তোবা রিজেন্ট বোর্ডে উপস্থাপনা ভুল হয়েছে বা তারা হয়তো বুঝেনি। তারা যে ইউনিফাইড রুলের কথা  ভাবছে, তা সবার জন্য তো এক হবে, আমরা সেই কথাটাই ভাবছিলাম। আমরা আশাবাদী, এ বিষয়ে আগামীকালের মধ্যে হয়তো একটা সমাধান আসবে।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুবের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কথা বলবেন না বলে লাইন কেটে দেন।