ময়মনসিংহ নগরে কিছুটা কম হলেও গ্রামে গ্রামে চলছে ব্যাপক লোডশেডিং
গ্রীষ্মকাল আসার পর থেকেই ময়মনসিংহ জেলায় শুরু হয়েছে লোডশেডিং। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে ময়মনসিংহ নগর, সব জায়গাতেই চলছে লোডশেডিং। পবিত্র রমজানের পর থেকে নগরের কিছুটা কমলেও পল্লী বিদ্যুতের অধীন জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগুলোতে লোডশেডিং ব্যাপক মাত্রায় চলছে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৩-এর অধীন সদর উপজেলার কিছু অংশসহ জেলার সাতটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকেই প্রতিটি উপজেলাতে ছিল ব্যাপক লোডশেডিং। এমনকি রাত দুইটা পর্যন্ত একই রকম লোডশেডিং ছিল। এতে গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার অংশবিশেষ, ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট, তারাকান্দা, ফুলপুর, গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় গতকাল দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৭২ মেগাওয়াট। বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৪১ মেগাওয়াট। এক ঘণ্টা পরপর বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৩-এর সূত্রে আরও জানা যায়, ঈদের আগে গ্রামগুলোতে প্রায় ৫০ শতাংশ লোডশেডিং ছিল। ওই সময় সাতটি উপজেলার সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৯৬ মেগাওয়াট। সরবরাহ ছিল ৪৬ মেগাওয়াট। এখন বোরো ধানের সেচ বন্ধ হওয়ায় চাহিদা কমেছে। তাতে লোডশেডিং কমেছে কিছুটা।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার নওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাজহারুল ইসলাম বলেন, রোজার পর বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও রোববার রাতে লোডশেডিং ছিল বেশি। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত একটু পরপর বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে প্রচণ্ড গরমের কারণে মানুষ খুব ভোগান্তিতে পড়ে। দিনের বেলাতেও ঘন ঘন লোডশেডিং হয়।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৩-এর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী ১৫ মে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে। এটি চালু হলেও ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেবে। সে ক্ষেত্রে ময়মনসিংহ জেলার অন্য উপজেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে।
ময়মনসিংহ নগরে গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত লোডশেডিং থাকলেও রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কোনো লোডশেডিং ছিল না। দুটি বিক্রয় ও বিতরণকেন্দ্রের মাধ্যমে ময়মনসিংহ নগরের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বিক্রয় ও বিতরণকেন্দ্র ১-এর সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যা থেকে ১১টা পর্যন্ত লোডশেডিং ছিল। তবে ১২টার পর থেকে লোডশেডিং ছিল না। ১২টার পর থেকে চাহিদা ছিল ৩৩ মেগাওয়াট। চাহিদার শতভাগ সরবরাহ ছিল। তবে সন্ধ্যায় লোডশেডিং ছিল।
এ কেন্দ্রের অধীন পরিচালিত ময়মনসিংহ নগরের আনন্দ মোহন কলেজ রোড এলাকায় গতকাল সন্ধ্যায় টানা পৌনে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং ছিল। আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা চলছে। পৌনে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
বিক্রয় ও বিতরণকেন্দ্র ১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বলেন, রোজার পর থেকে লোডশেডিং কমেছে। সন্ধ্যা থেকে ১১টা পর্যন্ত লোডশেডিং হলেও পরে আর হচ্ছে না।
ময়মনসিংহের বিক্রয় ও বিতরণকেন্দ্র ২-এর অধীনেও গতকাল রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত লোডশেডিং ছিল না। এ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত রায় বলেন, রাত ১২ থেকে ২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৫২ মেগাওয়াট। শতভাগ সরবরাহ থাকায় লোডশেডিং হয়নি।