আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে স্বাস্থ্যকর্মীকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

নারায়ণগঞ্জ জেলার মানচিত্র

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে দুই স্বাস্থ্যকর্মীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীদের বিরুদ্ধে। আজ বুধবার বিকেল তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান হাসপাতালের কর্মীরা। লাঞ্ছনার শিকার দুই স্বাস্থ্যকর্মী হলেন সাইফুল ইসলাম ও টুটুল মিয়া। তাঁরা দুজনই হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মো. সুজন নামে স্থানীয় ছাত্রলীগের এক কর্মী তাঁর এক আত্মীয়কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে থাকা ওয়ার্ডবয় সাইফুল ইসলাম রোগীর দিকে খেয়াল না করে দুর্ব্যবহার করেন সুজনের সঙ্গে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে সুজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে থাকা ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত মাহদী হাসানকে বিষয়টি জানান। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল মোল্লা ও ২০-২৫ কর্মীকে নিয়ে সেখানে যান। পরে মাহদীর নেতৃত্বে হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় সাইফুল ইসলাম ও টুটুল মিয়াকে সবার সামনে গালাগাল ও লাঞ্ছিত করা হয়।

হামলার সময় হাসপাতালে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং রোগীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আশরাফুল আমিন সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই বিষয়ে জানতে আশরাফুল আমিনের মুঠোফোনে ফোন করলে তাঁর সহকারী পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, ‘স্যার নামাজ পড়ছেন। নামাজ শেষ হলে তাঁকে আমি জানাব।’ এরপর একাধিকবার ফোন কল ও মেসেজের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।

ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে পদ না থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অদূরে সরকারি সফর আলী কলেজে ছাত্রলীগ থেকে মনোনীত হয়ে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন মাহদী হাসান। ঘটনার বিষয়ে মাহদী বলেন, ‘আমাদের এক কর্মী রোগী নিয়ে গেলে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন হাসপাতালের এক স্টাফ। এ বিষয়ে জানতে গেলে আমাদের ওপরও চড়াও হন তিনি। পরে সেখানে হাতাহাতির একটি ঘটনা ঘটেছে।’ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘স্টাফরাই উল্টো আমাদের ওপর আক্রমণাত্মক ছিল। সেখানে আমাকেও লাঞ্ছিত করা হয়।’

ওয়ার্ডবয় সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রোগীর স্বজনকে বলেছিলাম, ডাক্তার অন্য রোগী নিয়ে ব্যস্ত, তাঁকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে; কিন্তু তিনি ধৈর্য ধরতে না পেরে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালের বাইরে থাকা ছাত্রলীগ নেতাদের ডাকেন। আমি কিছু বলার আগেই ছাত্রলীগ নেতা মাহদী হাসান রিফাতের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।’

আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়মা আফরোজ বলেন, তিনি একটি প্রশিক্ষণে বাইরে থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘একটি ছোট ঘটনা বড় হয়ে গেছে। তর্কবিতর্ক থেকে বিষয়টি বড় হয়েছে। উভয়পক্ষের মধ্যেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। আমি আগামীকাল ব্যাপারটি নিয়ে বসব। তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’