দেশের প্রকৃত সাক্ষরতার হার ৫০ শতাংশের নিচে: উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায়
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় বলেছেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে, শিক্ষকদের মানোন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সাক্ষরতার ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়নি। যেটা মূল লক্ষ্য, সেটা অর্জিত হয়নি। আমাদের এখনো কাগজেপত্রে মাত্র ৭৮ শতাংশ সাক্ষর। এই মধ্যেও গলদ রয়ে গেছে। আমাদের প্রকৃত সাক্ষর (সাক্ষরতার হার) ৫০ শতাংশেরও নিচে। নিরক্ষর জাতি দিয়ে আমরা উন্নতি করতে পারব না।’
আজ রোববার সকালে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি। নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এ সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
এতে উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা প্রকৃতপক্ষে সাক্ষর হয়ে উঠে না, তারা হাইস্কুলে পিছিয়ে থাকে। এবং তারা উচ্চশিক্ষায় কখনো ভালো করতে পারে না। প্রাথমিকের কাজ হলো, একটা মানুষকে সাক্ষর করে তোলা। আমাদের কথ্য ভাষা, লেখ্য ভাষা, গাণিতিক ভাষায় সাক্ষর করে তোলা। বিভিন্ন জাতির বিভিন্ন ধরনের সম্পদ থাকে কিন্তু আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ জনসম্পদ। এই সম্পদকে যদি কাজে লাগাতে না পারি তাহলে আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল হাকিম। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷
সভায় শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, অধিকাংশ বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নেই। প্রধান শিক্ষক নেই অধিকাংশ বিদ্যালয়ে। ভবন নির্মাণ করছে এক সংস্থা আবার ওয়াশ ব্লক (টয়লেট) নির্মাণ করছে আরেক সংস্থা। দুই দপ্তরের সমন্বয়ের অভাবে শিক্ষার্থীরা ভুক্তভোগী হচ্ছে। এখনো অধিকাংশ বিদ্যালয় বই পায়নি। নোয়াখালী জেলায় প্রাক্–প্রাথমিকে এখনো একটি বইও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা কর্মকর্তারা বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর থেকে নূরানী মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষার্থী বেশি। ভালো শিক্ষক থাকার পরও শিক্ষার্থী কম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এসব মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনে বই দেওয়া হয় না। তাদের সরকারি নীতিতে আনা গেলে সেখানকার অবস্থাও পর্যবেক্ষণ সম্ভব হবে।
কর্মকর্তাদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ‘সব কটি বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোকে আমরা নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসার কাজ করছি। আমরা নিবন্ধন করাচ্ছি সেগুলোকে। সে ক্ষেত্রে তাদের পক্ষ থেকে কিছু দাবিদাওয়া ছিল। নিবন্ধন সহজ করার দাবি ছিল আমরা সেটাও করেছি। সরকারি বেসরকারি সব কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আমার পাঠ্যপুস্তক দিয়ে থাকি। তাহলে আমরা শর্তারোপ করতে পারি, রেজিস্ট্রেশন না থাকলে আপনি পাঠ্যপুস্তক পাবেন না।’