জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণে কাজ চলছে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় মেঘনা ডিপোর রিসিভার টার্মিনাল স্থাপনের কাজ পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বুধবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিশ্ববাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করে দাম নির্ধারণের কাজ চলছে। আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় মেঘনা ডিপোর রিসিভার টার্মিনাল স্থাপনের কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপন করছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে পাইপলাইন দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। পাইপলাইনে তেল সরবরাহ করা হলে পরিবহন খাতে জ্বালানি তেলের দাম অনেক সাশ্রয়ী হবে।

পাইপলাইন স্থাপন সম্পন্ন হলে জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে দেশে যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ সম্পন্ন হবে মন্তব্য করেন নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, এরই মধ্যে পতেঙ্গা থেকে গভীর সমুদ্র বন্দরে ডিপ সি পাইপলাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগে বড় মাদার ভেসেল থেকে ছোট ছোট লাইটার জাহাজে করে তেল নিয়ে পতেঙ্গাতে আসত। সেখান থেকে গাড়িতে বা ছোট ছোট জাহাজে করে বিভিন্ন ডিপোতে সরবরাহ করা হতো। মাদার ভেসেল বা বড় জাহাজ ১২ থেকে ১৪ দিন বসে থাকার কারণে ডেমারেজ গুনতে হতো। পাইপলাইন স্থাপনের কারণে খরচ কমে আসবে। এ ছাড়া পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম পতেঙ্গা থেকে গোদনাইল এবং গোদনাইল ডিপো থেকে বিভিন্ন জায়গায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে। এতে তেল পরিবহনে খরচ অনেক কমে আসবে।

ঢাকায় বিমানবন্দরে দ্রুত জ্বালানি তেল সরবরাহেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান প্রতিমন্ত্রী। এ সময় প্রকল্পটির বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি। পাইপলাইন স্থাপনের কাজ তদারকি করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ২৪ ও ৩৪ ফ্রিগেট। বাংলাদেশি ঠিকাদারের মাধ্যমে এই পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলছে। ২০১৬-২০১৭ সালে এই কাজ শুরু হলেও কোভিডের কারণে দুই বছর কাজ বন্ধ ছিল। যে কারণে নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে। চারটি জেলার ওপর দিয়ে এই কাজ করা হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকায় তেল সরবরাহের পাইপলাইনের কাজ ও ফতুল্লার মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপো প্রস্তাবিত রিসিভ টার্মিনালের স্থান পরিদর্শন করেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইসহ বিপিসির ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিপিসি নিয়ে সংসদীয় কমিটির প্রশ্নের বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিপিসি একটি বড় প্রতিষ্ঠান। কিছু প্রশ্ন থাকে। সংসদীয় কমিটি বিপিসির আর্থিক বিষয় নিয়ে একটি প্রশ্ন তুলেছেন। আমরা বিপিসিকে বলেছি, একটি তৃতীয় অডিট প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ফাইন্যান্সিয়ালসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি অডিট করানোর জন্য। আমরা যেহেতু আগামীতে তেলের ওপেন মার্কেটে প্রবেশ করার চেষ্টা করছি, তাই আমাদের পলিসি লেভেলেও গুণগত পরিবর্তন প্রয়োজন। আগামীতে তেলের দাম নির্ধারণ বছরের শুরুতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’