রংপুরে মেঘাচ্ছন্ন শীতল দিনে মানুষের ঘুরে বেড়ানো

বিভিন্ন রাইডে চড়ে শিশু–কিশোরদের উচ্ছ্বাস। রংপুরে ঈদ–পরবর্তী সময়ে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। গতকাল বিকেলে রংপুর চিড়িয়াখানায়ছবি: মঈনুল ইসলাম

ঈদের পরের দিন আজ শুক্রবার রংপুরের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। গতকাল ঈদের দিনের মতো আজও শীতল বাতাস বইছিল। তিস্তা নদীর পাড়সহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে খোলা হাওয়ায় আনন্দ-উচ্ছ্বাসে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আজ রংপুরের ভিন্ন জগৎ, তাজহাট জমিদারবাড়ি, চিড়িয়াখানা ও উদ্যান, কালেক্টরেট সুরভি উদ্যান, চিকলি পার্ক, প্রয়াস সেনা পার্কসহ প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্র মানুষের পদচারণে মুখরিত ছিল।

ঈদের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রেই নারী ও শিশুসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি। গতকাল বিকেলে শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে সেনা কল্যাণ পার্ক ‘প্রয়াস’-এর ঘাঘট নদের পাড়েও স্বজনদের নিয়ে দল বেঁধে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।

ঢাকা থেকে ঈদ করতে রংপুরে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন প্রাইভেট কারে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন। গঙ্গাচড়ার মহিপুর শেখ হাসিনা সেতুর পাশে তিস্তা পাড়ে তাঁদের দেখা মিলল। সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘পাঁচ বছর পর রংপুরে ঈদ করতে আসা। এখানে এসে খোলামেলা পরিবেশে শান্তিতে ঘুরতে পেরে অনেক ভালো লাগল। ঢাকায় কখনো এভাবে ঘুরে বেড়ানো হয় না।’

অনেকে সন্তানদের নিয়ে নদীর পাড়ে হেঁটে বেড়াতে আনন্দ পাচ্ছেন। রংপুর জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হোসেন আবেদ আলী বলেন, ‘আগের রংপুর এখন আর নেই। অনেক বছর পর ঈদ করতে এসে এমনটাই মনে হলো। সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে সবাই খুব আনন্দ পেয়েছে।’

ঈদের দিন ও পরের দিন রংপুরে প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রেই নারী ও শিশুসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। গতকাল রংপুর চিড়িয়াখানায়
ছবি: মঈনুল ইসলাম

ঈদের দিন বিকেলে চিড়িয়াখানায় দেখা গেছে, অধিকাংশ শিশু মা-বাবার হাত ধরে ঘুরছে। বিভিন্ন ধরনের রাইডে চড়ছে। সন্তানদের নিয়ে এভাবে ঘুরে বেড়ানোয় বেশ আনন্দ লাগছে বলে জানালেন সাদিয়া আফরিন নামের একজন গৃহিণী। তিনি বলেন, ‘চিড়িয়াখানায় অনেক গাছগাছালি। শান্ত পরিবেশ। পশুপাখিদের দর্শনের পাশাপাশি এমন পরিবেশে সন্তানদের আনতে পেরে ভালো লাগছে। সন্তানেরা আনন্দ পাচ্ছে এটিই বড় পাওয়া।’

রংপুরের ঐতিহাসিক তাজহাট জমিদারবাড়িতেও বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। এ ছাড়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সবুজ চত্বর ও জিলা স্কুলের বিশাল মাঠেও শিশু-কিশোরদের ঘুরতে দেখা যায়। জিলা স্কুলের প্রাক্তন অনেক শিক্ষার্থী তাঁদের সন্তানদের নিয়ে স্কুল চত্বর ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছেন।

জামিরুল ইসলাম নামের এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেক পুরোনো বন্ধুর দেখা পেতে এখানেই ছুটে এসেছি। বিশাল দুটি মাঠ এখনো বহাল। স্কুল ক্যাম্পাস ঘুরেফিরে সন্তানদের বেশ ভালো লেগেছে।’

ঈদের দিনসহ পরবর্তী সময়ে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর জানা যায়নি। প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রে জেলা ও মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।