শ্রীপুরে নির্বাচনী প্রচারের গাড়িচাপায় শিশুর মৃত্যুতে প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আবেদন

গাজীপুর জেলার মানচিত্র

নির্বাচনী প্রচারের গাড়ির চাপায় এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবদুল জলিলের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর এই আবেদন করেন শ্রীপুর উপজেলার ভিটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশিক বিন ইদ্রিস।

মো. আবদুল জলিল শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক।

আবেদনে আশিক বিন ইদ্রিস বলেন, গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীপুরের শফিক মোড় এলাকায় একটি মাইক্রোবাসের চাপায় ইয়াসিন নামের সাড়ে তিন বছর বয়সী এক শিশু মারা যায়। মাইক্রোবাসটি চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল জলিলের নির্বাচনী প্রচারণায় শোডাউনে ব্যবহৃত হচ্ছিল। মাইক্রোবাসে চেয়ারম্যান প্রার্থীর মেয়ে ও স্বজনেরা ছিলেন। পুরোপুরি বেআইনিভাবে শোডাউন করা অবস্থায় এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী এর আগেও কয়েক দফায় আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল নির্বাচনী গণসংযোগের জন্য শ্রীপুরের মোলাইদ এলাকায় বেশ কয়েকটি গাড়ি জড়ো হচ্ছিল। এ সময় গাড়িবহরের মধ্যে থাকা একটি মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মো. ইয়াসিন নামের শিশুটি আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ইয়াসিন গাজীপুর মহানগরের হাতিয়াব এলাকার বাসিন্দা কাতারপ্রবাসী জহিরুল ইসলামের ছেলে।

তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত শিশুটির মামা আবদুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি।

গতকাল এক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের পর নতুন করে আলোচনা আসে আবদুল জলিলের নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়টি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল বিপুলসংখ্যক লোক নিয়ে গাড়ির শোডাউন করেন আবদুল জলিল। এই শোডাউন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এ ঘটনায় তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া গতকাল আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আবদুল জলিলের এক কর্মীকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে আবদুল জলিলের এক কর্মীকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই দিন অন্য আরও কয়েক প্রার্থীর কর্মীকেও জরিমানা করা হয়।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা প্রথম আলোকে বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এক প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের জন্য এক ব্যক্তি আবেদন করেছেন বলে শুনেছেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব প্রার্থীর ক্ষেত্রেই আইন সমানভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।