হাঁস-মুরগির ঘর থেকে আটক দুই মেছো বাঘের ছানা ফিরল বনে

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় মেছো বিড়ালের দুটি ছানা উদ্ধারের পর সেগুলো বনে অবমুক্ত করা হয়। গতকাল রাতে গোপালপুর পাহাড়েছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক কৃষকের হাঁস-মুরগির ঘর থেকে দুটি মেছো বিড়ালের ছানা আটক হওয়ার খবর পেয়ে সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সেগুলো বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক পরিচর্যার পর গতকাল সোমবার রাতে গোপালপুর পাহাড়ে ছানাগুলোকে অবমুক্ত করে ‘সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসং’-এর স্বেচ্ছাসেবী ও বন বিভাগের কর্মীরা।

এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় পৌর শহরের পশ্চিম বালিকান্দি এলাকায় বিএম শাহীন নামের এক ব্যক্তির হাঁস-মুরগির ঘর থেকে মেছো বিড়ালের ছানা দুটিকে আটক করা হয়।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসংয়ের সূত্রে জানা গেছে, অনেকেই প্রাণী দুটিকে বাঘের ছানা বলে ধারণা করেন। একপর্যায়ে সেগুলোকে খাঁচায় আটকে রাখা হয়। কেউ কেউ মেরে ফেলতেও চেয়েছিলেন। পরে সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকদের খবর দেওয়া হয়। তাঁরা সেখানে গিয়ে মেছো বাঘের ছানা দুটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক পরিচর্যার জন্য দুর্গাপুর বন বিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে যান।

বিএম শাহীন বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে আমার হাঁস-মুরগির খোঁয়াড় থেকে চারটি হাঁস নাই হয়ে যায়। আমি ভেবেছিলাম, হয়তো শিয়াল খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু রোববার সন্ধ্যায় খোঁয়াড় পরিষ্কার করতে গিয়ে ভেতরে বিড়ালের বাচ্চার মতো দুটি ছানা দেখতে পাই। পরে সেগুলো বের করতে গিয়ে দেখি, নখ বড় বড় ও গায়ের রং কিছুটা ভিন্ন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন বাচ্চা দুটিকে মেরে ফেলতে চাইছিল। কিন্তু আমি তা হতে দেইনি।’

সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসংয়ের সভাপতি রিফাত আহমেদ বলেন, প্রাণীগুলো সুস্থ থাকায় সোমবার রাতে গহিন বনে জলাশয়ের ধারে অবমুক্ত করা হয়েছে।

দুর্গাপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মজনু প্রামাণিক বলেন, বাচ্চাগুলো মোটামুটি বড় হওয়ায় এখন নিজেরাই শিকার ধরে খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। যেহেতু মেছো বিড়াল একটি নিশাচর প্রাণী, তাই আমরা দিনের পরিবর্তে রাতে সেগুলোকে অবমুক্ত করেছি।

মেছো বিড়ালকে মেরে না ফেলার অনুরোধ জানিয়ে মজনু প্রামাণিক বলেন, মেছো বিড়াল মূলত একটি ছোট প্রজাতির বিড়াল। এটিকে অনেকে বাঘের মতো হিংস্র ভেবে মেরে ফেলেন, যা উচিত নয়। মেছো বিড়াল গহিন বনে থাকে না, লোকালয়ের আশপাশে হাওর কিংবা ঝোপঝাড়ে থাকে। এটি মোটেও হিংস্র প্রাণী নয়, তাই মেছো বিড়াল নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এ বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।