নওগাঁ-২ আসনে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, ভোটার উপস্থিতি কম

নওগাঁ-২ আসনে ভোটগ্রহণ শুরুর অনেকটা বেলা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে ছিল না পর্যাপ্ত ভোটারের উপস্থিতি।সকালে পত্নীতলা উপজেলার পুইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের স্থগিত হয়ে যাওয়া নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে। তবে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। আজ সোমবার সকাল আটটায় শুরু হয় ভোট গ্রহণ। এর আগে ভোর পাঁচটার দিকে ব্যালট পেপার বুঝে নেন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা।

পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটির ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের ভিড় দেখা যায়নি। ভোটাররা কেন্দ্রে ঢুকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছেন। ভিড় না থাকায় কেন্দ্রগুলোতেও কাজের ব্যস্ততা ছিল না প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের।

বেলা দুইটার দিকে পত্নীতলা উপজেলার পুইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট পড়ে ২৪ শতাংশ। ওই কেন্দ্রের মোট ভোটার ১ হাজার ৮৭৩টি। ওই কেন্দ্রের একটিমাত্র প্রবেশপথ থাকলেও ভোটারের আসা–যাওয়ায় ভিড় দেখা যায়নি। এই কেন্দ্রের প্রধান ফটকে প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে চারজন ভোটারকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, ওই কেন্দ্রের ছয়টি বুথে, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা সবাই সুশৃঙ্খলভাবে বসে আছেন। ভোটার না থাকায় তাঁদের মধ্যে কাজের কোনো ব্যস্ততা ছিল না। বেলা দেড়টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৮ শতাংশ।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শহীদুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহসম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য এইচ এম আখতারুল আলম ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী মাহমুদ রেজা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এইচ এম আখতারুল আলম ট্রাক প্রতীক নিয়ে এবং মেহেদী মাহমুদ রেজা লড়ছেন ঈগল প্রতীক নিয়ে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আট দিন আগে গত ২৯ ডিসেম্বর নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) আমিনুল ইসলাম মারা গেলে ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। পরবর্তী সময়ে গত ৮ জানুয়ারি ওই আসনের নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করে ইসি। নতুন তফসিল অনুযায়ী আজ ভোট অনুষ্ঠিত হয়।

নওগাঁ-২ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫৬ হাজার ১৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৭২ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৫৯ জন। ১২৪টি ভোটকেন্দ্রের ৭০৬টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ করা হয়।

সকালে ভোট গ্রহণের শুরুতে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম দেখা যায়। তবে দুপুরের দিকে ভোটার সকালের তুলনায় বেশি দেখা গেছে। বিকেলে আবার ভোটার উপস্থিতি কম দেখা যায়। ভোটকেন্দ্রগুলোর বাইরে নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর অনুসারী নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি চোখে পড়লেও অপর দুই প্রার্থীর সমর্থকদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচ এম আখতারুল আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোট শুরুর পর থেকে আমার কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া গতকাল রোববার তাঁর কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে এসেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুল আলমের অভিযোগের বিষয়ে নৌকার প্রার্থীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ধামইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ মানুষের শহিদুল ইসলাম বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী যেসব অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। ভোট শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. গোলাম মওলা বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনী এলাকায় ১৮ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে রয়েছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশের ২৬টি ভ্রাম্যমাণ দল ও ছয়টি স্ট্রাইকিং টিম কাজ করছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।