চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে আবার বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় সীমান্তে বিএসফের গুলিতে নিহত রবিউল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর সীমান্তের বিপরীতের ভারতীয় অংশে রবিউল ইসলাম (৪০) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রাঙ্গিয়ারপোতা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রবিউল উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের পীরপুরকুল্লাহ গ্রামের যুগেরপাড়ার মৃত রহমতুল্লাহর ছেলে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন রবিউল। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার বেনীপুর সীমান্তের বিপরীতে ভারতীয় অংশে নোনাগঞ্জে বিএসএফের গুলিতে মিজানুর রহমান নামের এক বাংলাদেশি নিহত হন। ঘটনার এক সপ্তাহ পর বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের পর ২০ সেপ্টেম্বর নিহত মিজানুরের লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ।

রবিউল ইসলামের মরদেহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে হাসপাতালে রাখা আছে। বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ বাংলাদেশে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
আবদুল করিম, চেয়ারম্যান, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা

ঠাকুরপুর গ্রামের কয়েকজন গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় রবিউল ইসলামসহ তিন-চারজন অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে ভারতের রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামে গরু আনতে যান। রাত ১২টার দিকে গরু নিয়ে ফেরার সময় ঠাকুরপুর সীমান্তের ৯২ নম্বর মেইন খুঁটি এলাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করলে বিএসএফের টহল দলের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রবিউল ইসলাম। এ সময় রবিউল ইসলামের সহযোগীরা দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। পরে তাঁরা দেশে ফিরে এসে রবিউলের পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানান।

এ বিষয়ে স্থানীয় কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল করিম সাংবাদিকদের জানান, রবিউল ইসলামের মরদেহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরে হাসপাতালে রাখা আছে। বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ বাংলাদেশে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি অধিনায়ক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঠাকুরপুর সীমান্তে বাংলাদেশিকে গুলি করা হয়েছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হতে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, রবিউলের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তবে কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক ইমরান হোসেন স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে রবিউলের বাড়িতে যান এবং খোঁজখবর নেন। বিজিবির মুন্সিপুর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশকে জানিয়েছেন, পীরপুরকুল্লাহ গ্রামের রবিউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন।