যমুনার পানি বেড়ে সিরাজগঞ্জের ৪২ ইউনিয়ন প্লাবিত
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বেড়ে সিরাজগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে অনেক ফসলি জমি। পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অনেক মানুষ।
সিরাজগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, আজ শনিবার দুপুর ১২টায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ১৩ দশমিক ১০ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত যমুনার পানি বেড়েছে ৬ সেন্টিমিটার। বর্তমানে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই তা স্থিতিশীল হবে। কারণ, উজানের জেলাগুলোয় যমুনার পানি ইতিমধ্যে কমতে শুরু করেছে।
আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলী ও বাঐতাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গ্রাম দুটির নতুন নতুন রাস্তা, বসতবাড়ি, বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। গ্রামের মানুষ যাতায়াত করছেন নৌকা ও ভেলায়। এতে তাঁরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বলেন, যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এরই মধ্যে পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জ সদর ও কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ২০৩ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে রোপা আমন, সবজি, আউশ, বীজতলা, কলা ও আখের জমি রয়েছে। তবে জেলার চৌহালী, বেলকুচি ও শাহজাদপুর উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো পাওয়া যায়নি।
সিরাজগঞ্জের ৯টি উপজেলার মধ্যে ৫টি উপজেলায় বন্যার ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা দুর্যোগ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আকতারুজ্জামান। তিনি বলেন, উপজেলাগুলোয় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে রোববারের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনটি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৬৫৭ জনের তালিকা পেয়েছেন। সব তালিকা এলে সেই অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হবে।