ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে শিশুর কবজি বিচ্ছিন্ন

প্রতীকী ছবি

কুমিল্লায় ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে আবদুল্লাহ নামে সাত বছর বয়সী এক শিশুর কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নগরের তেলিকোনা চৌমুহনী এলাকার মানিক মিয়া টাওয়ারের চতুর্থ তলায় এ ঘটনা ঘটে।

শিশু আবদুল্লাহ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরাইশ এলাকার বাসিন্দা ও চকবাজারের ব্যবসায়ী মো. শামীমের ছেলে। শিশুটিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা–ও আহত হয়েছেন।

শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী শামীম পরিবার নিয়ে তেলিকোনা চৌমুহনী এলাকার মানিক মিয়া টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় ভাড়া থাকতেন। আজ তাঁরা বাসা পরিবর্তন করে ওই ভবনের চতুর্থ তলায় আসেন। শিশু আবদুল্লাহকে চতুর্থ তলায় রেখে সকাল থেকেই তাঁরা মালামাল নামানোর কাজ করছিলেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে চতুর্থ তলার জানালার গ্রিল দিয়ে ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে হাত রাখে শিশুটি। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটি বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। বিষয়টি দেখে দ্রুত শিশুটির মা তাকে টান দিলে শিশুটির হাত থেকে কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় শিশুটির মা-ও আহত হন। দ্রুত শিশুটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর পরিবারের ইচ্ছায় শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান মীর্জ্জা মো. তাইয়েবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটিকে যখন আমাদের এখানে আনা হয়, তখন তার অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। এক হাত পুড়ে আলাদা হয়ে গেছে। দুই পা বার্ন হয়েছে। আমরা ইমার্জেন্সি যা করার, করে দিয়েছি। চেয়েছিলাম অপারেশন করাতে। কিন্তু তার পরিবারের ইচ্ছায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তাইয়েবুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুটির হাত পুড়ে শরীর থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ায় আর জোড়া লাগানো সম্ভব না। এটা মারাত্মক দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভবনটির পাশ দিয়ে বিদ্যুতের অনিরাপদ তারে আগেও একজন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। এ ছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের পাশে এমন অনিরাপদ বিদ্যুতের লাইন আছেন। কয়েক দিন আগে সংরাইশ এলাকায় একই ধরনের দুর্ঘটনায় এক নারী আহত হয়েছিলেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী পারভেজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি মর্মান্তিক। এখানে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো অবহেলা নেই। বিদ্যুতের লাইনটি অনেক আগের। মূলত ভবনটি বিদ্যুতের তার ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনটি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে দুর্ঘটনার শিকার শিশুটির হাত বিদ্যুতের তার থেকে উদ্ধার করা হয়।’