এই শীতে ছাদবাগানের গাছে থোকায় থোকায় আম

সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ছাদবাগানেে থোকায় থোকায় ঝুলছে আম। গত বৃহস্পতিবার সকালেছবি: প্রথম আলো

আম পাকে বৈশাখে, এ কথা সবারই জানা। মার্চ মাসের আগে অনেক আমগাছে কাঁচা আমও দেখা যায় না। কিন্তু চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি বাড়ির ছাদবাগানে এই মধ্য জানুয়ারিতেই আমের দেখা মিলেছে। বাড়িটির ছাদবাগানের ছোট্ট একটি গাছে ঝুলছে থোকায় থোকায় আম। পাশে রয়েছে বরই, তেঁতুল ও পেয়ারার গাছও। ফুটেছে পেয়ারা ও ডালিমের অসংখ্য ফুল।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ছাদবাগানে এমন আম ধরেছে। সীতাকুণ্ডের নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে একমাত্র বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ছাদেই বাগান করা হয়েছে। পরিষদ ভবনের ছাদের পুরোটাজুড়ে লাগানো হয়েছে রেড ম্যাঙ্গো, বারি-১১, বারি-৪, চিয়াংমাই, আম্রপালি, কাটিমন জাতের আমগাছ। এ ছাড়া রয়েছে থাই শরিফা, ভারত সুন্দরী ও বল সুন্দরী বরইগাছ, ভাগুয়া জাতের ডালিম, থাই পেয়ারা, বারি-১ জাতের মাল্টা, মিষ্টি তেঁতুল ও লাল ড্রাগনের গাছ।

আজ শনিবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের ছাদবাগানে গিয়ে দেখা যায় গাছে পানি দিচ্ছেন গ্রাম পুলিশের সদস্য সাহাব উদ্দিন। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদে চাকরি করেন তিনি। নিজেরও সামান্য কৃষি রয়েছে। যখন পরিষদে কোনো কাজ থাকে না, কিংবা ছুটির পর ছাদে উঠে তিনি গাছের পরিচর্যার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া চেয়ারম্যানও পরিষদের কার্যক্রম শেষ করে গাছের যত্ন নেন।

কথা হয় বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীরের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল মুনছুর তাঁকে পরিষদের ছাদে বাগান করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। তিনিও রাজি হয়ে যান। প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয় ছাদবাগানে। প্রতিদিন যখন সময় পান বাগানের পরিচর্যা করেন। গাছের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোও লাগে। ছাদবাগানে এ বছর ড্রাগনের প্রচুর ফলন হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবাগ্রহীতা, সদস্য, গ্রাম পুলিশসহ সবাইকে নিয়ে বাগানের ড্রাগন খেয়েছেন তাঁরা। এখন থোকায় থোকায় আম ধরেছে। বারোমাসি জাতের তিনটি গাছ থেকে এমন আম পাচ্ছেন।

চেয়ারম্যানদের সদিচ্ছা থাকলে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে ছাদবাগান করা সম্ভব বলে জানান উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল মুনছুর। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান ও গ্রাম পুলিশের সদস্যেরা বাগানটির প্রতি যত্নশীল। বছরের প্রতিটা সময় কোনো না কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে ফলন আরও বাড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, সীতাকুণ্ডের ইউনিয়ন পরিষদে একমাত্র ছাদবাগান এটি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় আসা-যাওয়ায় যে কারও চোখে পড়বে। সেখানে লাগানো বারি-১১ জাতের আম বছরে চারবার পাওয়া যাবে। তবে আমের মিষ্টতা কম হলেও কাঁচা আমের স্বাদ ভালো।