ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলমের পক্ষে মাঠে নেমেছেন দুজন সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদের দুই চেয়ারম্যান। প্রতীক বরাদ্দের আগেই নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ করে ১১ অক্টোবর মনোনয়নপত্র দাখিলের পর থেকেই তাঁরা মাঠে নামেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপনির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শাহজাহান আলমের পক্ষে বিশেষ কর্মিসভার আয়োজন করা হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মিসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সংরক্ষিত ৩১২ আসনের নারী সংসদ সদস্য ও সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি প্রমুখ।
সভা সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুর। সভায় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী অংশ নিয়েছেন। নেতা–কর্মীরা ঢাকঢোল বাজিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে সভায় অংশ নিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশেষ কর্মিসভা মূলত নির্বাচনী সভায় পরিণত হয়। সভায় দুই সংসদ সদস্যই নৌকার পক্ষে ভোট চান। এর আগে ১৪ অক্টোবর র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর উপস্থিতিতে আশুগঞ্জেও বিশেষ কর্মিসভা হয়েছে।
জানতে চাইলে সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মনে করি না যে এটি আচরণবিধি ভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে। আমি দলের (জেলা কমিটি) সভাপতি, আমি আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে পারি না? যদি আচরণবিধি ভঙ্গ হয়ে থাকে, তবে নির্বাচন কমিশন আমাকে চিঠি দিক, আমি জবাব দেব।’
উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের আগে আচরণবিধি অনুযায়ী সভা-সমাবেশ করতে পারেন না। প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোথাও আচরণবিধি ভঙ্গের বিশেষ অভিযোগ পেলে কিংবা জানানো হলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।’
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার মৃত্যুতে শূন্য হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।