যশোরে আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের পর্দা উঠেছে

ঢাকার আহির বাংলা নাট্যদলের প্রযোজিত 'জয়তুন বিবির পালা' নাটক মঞ্চায়নের মধ্যে দিয়ে গতকাল যশোর আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব শুরু হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

‘জয়তুন বিবির পালা’ নাটকটি মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে ১২ দিনব্যাপী যশোর আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের পর্দা উঠেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মঞ্চে এই নাটক মঞ্চস্থ হয়। যশোরের নাট্য সংগঠন থিয়েটার ক্যানভাস এ উৎসবের আয়োজক।

এর আগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, রাজনীতি ও সংস্কৃতিকে আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। সংস্কৃতিবিবর্জিত কোনো রাজনীতি হলে তা হবে নিষ্ঠুর ও অমানবিক। নাটক ও সংস্কৃতি মানুষকে পরিবর্তন করে।

যশোরে সাংস্কৃতিক ভবন নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সুন্দর একটি মিলনায়তনসহ যশোরে একটি সাংস্কৃতিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। আমার মন্ত্রণালয় টাকা দেবে। কিন্তু শহরের প্রাণকেন্দ্রে ১০ কাঠা জায়গা দরকার। জেলা প্রশাসন যত দ্রুত জায়গাটির ব্যবস্থা করে দেবে, তত দ্রুত কাজটি করতে পারব। সংস্কৃতিচর্চার জন্য যশোরের সব সাংস্কৃতিক সংগঠন এই ভবনে জায়গা পাবে।’

উদ্বোধনের আগে শিল্পকলা মিলনায়তন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহর ঘুরে আবার সেখানে গিয়ে শেষ হয়।

পরে আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব ২০২৩–এর আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নাট্যকার ও নির্দেশক মাসুম রেজা, নাট্যকার ও অভিনেতা সাধনা আহমেদ প্রমুখ।

আলোচনার শুরুতে দেশের পাঁচজন খ্যাতিমান নাট্যকার, নির্দেশক ও মঞ্চ অভিনেতাকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন নাট্য নির্দেশক সাঈদুর রহমার লিপন, নাট্যকার মুস্তাক আহমেদ, অভিনেতা এ কে আজাদ ও মাসুদ সুমন এবং থিয়েটার অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নিমাই সরকার।

উৎসবে ঢাকার ৯টি এবং যশোর, মৌলভীবাজার ও ভারতের ১টি করে মোট ১২টি নাট্যদল তাদের নাটক পরিবেশন করবে। উৎসবের প্রথম দিনে ঢাকার আহির বাংলা নাট্যদলের প্রযোজিত ‘জয়তুন বিবির পালা’ নাটকের রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন সাইক সিদ্দিকী। ‘জয়তুন বিবির পালা’ ছাড়াও ঢাকার আরও আটটি দলের নাটক মঞ্চস্থ হবে। এর মধ্যে দেশ নাটক ‘নিত্যপুরাণ’, সাধনা আর্টস অ্যান্ড থিয়েটার ‘প্রার্থিনী’, প্রাঙ্গণেমোর ‘হাছন জানের রাজা’, পালাকার ‘উজানে মৃত্যু’ নাট্যম রেপার্টরি ‘কোথায় জলে মরাল চলে’, নাট্যকেন্দ্র ‘পুণ্যাহ’, স্টেইজ ওয়ান ‘শোধ’ ও প্রাচ্যনাট ‘সার্কাস সার্কাস’; মৌলভীবাজারের মণিপুরী থিয়েটার ‘কহে বীরাঙ্গনা’, যশোরের থিয়েটার ক্যানভাস ‘লালসালু’ এবং ভারতের একমাত্র নাট্যদল শান্তিপুর সাংস্কৃতিক ‘অংশুপট উপাখ্যান’ নাটক মঞ্চস্থ করবে।