এরপরও সন্ত্রাসীরা বালু তোলার চেষ্টা করলে গতকাল বেলা একটার দিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ওরফে স্বপনের নেতৃত্বে একদল লোক চরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ সময় তাঁদের ভীতসন্ত্রস্ত করতে এবং প্রশাসনের লোকজনকে হুমকি দেওয়ার জন্য বালু সন্ত্রাসীরা অসংখ্য ফাঁকা গুলি ছোড়েন। ভয়ে স্থানীয় লোকজন ফিরে আসেন। তবে এদিন বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক ও লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর আজ ভোরেও একই স্থানে গুলির শব্দ শোনা যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মার বালু লুট করার জন্য ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী একটি চক্র পদ্মার চরের কুখ্যাত পান্না বাহিনীর নেতা কাকন আলী ওরফে ইঞ্জিনিয়ারের ছত্রচ্ছায়ায় বালুসন্ত্রাসীরা বাহিনী গঠন করেছেন। তাঁরা অবৈধভাবে বালু তুলে অর্থের ভাগাভাগি করতে চাইছেন। কিন্তু এটা করা হলে তাঁদের অনেক কৃষিজমি নষ্ট হবে। বিষয়টি তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু সন্ত্রাসীরা গ্রামবাসী ও প্রশাসনকে হুমকি দেওয়ার জন্য গতকাল দুপুর থেকে দুই দফায় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এতে যেকোনো সময় ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

লালপুর থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলটি নৌ পুলিশের এখতিয়ারভুক্ত। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। তাঁরা বালু উত্তোলনকারীদের তৎপরতা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে এসেছেন। নির্দেশ অমান্য করলে নৌ পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। গুলিবর্ষণের বিষয়টি নৌ পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানান ওসি।

ঈশ্বরদী নৌ পুলিশের পরিদর্শক এমদাদুল হক বলেন, তিনি গতকাল কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। ঘটনার কথা শুনে সেখানে একজন কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছিল। গুলিবর্ষণের ঘটনা সত্য বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। বালু তোলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানান ইমদাদুল।

লালপুরের ইউএনও শামীমা সুলতানা বলেন, লালপুরের সীমানায় পদ্মা নদী থেকে কোনোভাবেই অবৈধ পন্থায় বালু তোলা বরদাশত করা হবে না। বালু সন্ত্রাসীরা যত হুমকিই দিক, তাঁদের প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।