নড়াইলে অস্ত্রের মুখে দুটি ঘেরের মাছ লুটে নেওয়ার অভিযোগ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় দুটি মাছের ঘের থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ লুট করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে উপজেলার নড়াগাতী থানার খাশিয়াল ইউনিয়নের চোরখালী আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
দুটি ঘেরের একটির মালিক চোরখালী গ্রামের মনির মোল্যা এবং অন্যটির মালিক একই এলাকার ঝন্টু মোল্যা। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আট বছর ধরে চোরখালী এলাকায় খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা ও এতিমখানার দুটি ঘের ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছেন মনির হোসেন মোল্যা ও ঝন্টু মোল্যা। বছরখানেক আগে মনির একটি এনজিও থেকে এবং ঝন্টু ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঘেরে মাছ ছেড়েছেন। বুধবার সকালে মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পার্শ্ববর্তী মঙ্গলপুর গ্রামের বাবুল হোসেন মোল্যার নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘেরে গিয়ে সব মাছ লুট করে নেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে তাঁরা ফাঁকা গুলি ছোড়েন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ভয়ে ঘেরমালিকেরা সেখান থেকে পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী ঝন্টু মোল্যা বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর কৃষি ব্যাংক থেকে ৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে ঘেরে মাছ চাষ করেছিলেন। তাঁর পাশের ঘেরে মনির এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করছিলেন। কোনো ধরনের শত্রুতা ছাড়াই বুধবার বাবুল হোসেনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাঁদের দুটি ঘেরের মাছ ধরে নিয়ে গেছে। এতে তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। মাছ লুটে বাধা দেওয়ায় ঝন্টু ও মনিরকে হত্যার হুমকি দিয়ে গেছেন লুটকারীরা। এখন তাঁরা ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না।
খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি শেখ আয়েন উদ্দিন বলেন, ঘের দুটি দীর্ঘদিন ঝন্টু মোল্যা ও মনির মোল্যার কাছে ইজারা দেওয়া। নিয়মানুযায়ী তাঁরা মাদ্রাসায় টাকাও দেন। কিন্তু গত দুই বছর সরকার এবং মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ উভয়ই ঘের দুটির মালিকানা দাবি করে। সেই দ্বন্দ্বের কারণে মনির ও ঝন্টু টাকা দেননি। তবে ঘেরে তাঁদের মাছ ছিল, যা বাবলু ও তাঁর সহযোগীরা লুট করে নিয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুল হোসেন মোল্যা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না। আর ফাঁকা গুলি ছোড়া বা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লুট করার অভিযোগ সত্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ছেলেপেলে কিছু মাছ ধরে মাদ্রাসায় দিয়েছে। আর ঘের যারা নিজেদের ইজারা নেওয়া দাবি করছে, তাদের কোনো কাগজপত্র নেই।
নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে তাঁরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।