বিকট শব্দে চলন্ত ইঞ্জিনে যাত্রীবাহী ট্রেনের ধাক্কা, আহত অর্ধশতাধিক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে চলন্ত একটি ট্রেনের ইঞ্জিনে পেছন থেকে আরেকটি যাত্রীবাহী ট্রেন ধাক্কা দিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ফৌজদারহাট কে এম হাইস্কুল এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে চলন্ত একটি ট্রেনের ইঞ্জিনে পেছন থেকে বিকট শব্দে আরেকটি যাত্রীবাহী ট্রেন ধাক্কা দিয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার ফৌজদারহাট কে এম হাইস্কুল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় দুটি ট্রেনের ইঞ্জিনে থাকা চারজন লোকোমাস্টার গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ছাড়া অর্ধশতাধিক যাত্রী কমবেশি আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রামমুখী লেনের ওই অংশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ট্রেন দুর্ঘটনায় নানাভাবে অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। কারও মাথায় আঘাত লেগেছে। অনেকের ফোলা–জখম হয়েছে, কারও হাত-পা সামান্য কেটে গেছে। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড রেলস্টেশনের মাস্টার নিজাম উদ্দিনও আহত হয়েছেন।

ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথের চট্টগ্রামমুখী লেন দিয়ে একটি ট্রেনের খালি ইঞ্জিন যাচ্ছিল। ইঞ্জিনটি ফৌজদারহাট কে এম হাইস্কুল এলাকায় পৌঁছালে পেছনের দিক থেকে যাত্রীবাহী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা দেয়। এতে দুটি ট্রেনের ইঞ্জিনে থাকা চারজন লোকোমাস্টার আহত হন। যাত্রীরাও কমবেশি আঘাত পেয়েছেন। আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত কাউকে পাননি। সম্ভবত সিগন্যাল সমস্যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রী হিসেবে ছিলেন সীতাকুণ্ড রেলস্টেশনের মাস্টার নিজাম উদ্দিন। স্টেশনের দায়িত্ব শেষে মাকে নিয়ে চট্টগ্রাম নগরে ফিরছিলেন তিনি। নিজাম উদ্দিন বলেন, ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। জায়গাটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রীতে ঠাসা ছিল। ডিউটি শেষে তিনি বাসায় ফিরছিলেন। যে জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে চট্টগ্রামমুখী লেন ধরে একটি ইঞ্জিন ধীরে ধীরে যাচ্ছিল। পেছন থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন ধাক্কা দিলে তাঁরা হুড়মুড়িয়ে পড়েন। যাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন। ট্রেনের ভেতরে অনেকেই আহত হয়েছেন।

আরেক যাত্রী নাসির উদ্দিন বলেন, ট্রেনে হঠাৎ ধাক্কা লাগায় তিনি নিজের আসন থেকে আরেক আসনে গিয়ে পড়েন। ট্রেন দাঁড়ানোর পরপরই আতঙ্কে যাত্রীরা হুড়–মুড়িয়ে নেমে দৌড়াতে থাকেন। কী হয়েছে যাত্রীরা আসলে কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। পরে দুর্ঘটনার ব্যাপারটি জানতে পারেন।

রেল পুলিশের ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই লোকোমাস্টার ছাড়া গুরুতর তেমন কেউ আহত হননি। যাত্রীরা যে যাঁর মতো করে গন্তব্যে চলে গেছেন।

ফৌজদারহাট রেলস্টেশনের মাস্টার মোবারক হোসাইন বলেন, তিনি ঘটনা শুনে স্টেশনের দিকে যাচ্ছেন। কীভাবে কী হয়েছে, এখনো পুরোপুরি তিনি জানতে পারেননি।