দিনাজপুরে চাল আত্মসাতের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

দিনাজপুর জেলার মানচিত্র

চাল আত্মসাতের অভিযোগে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ৩ নম্বর আলিহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব এ কে এম আনিসুজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির ১ হাজার ৮০০ কেজি সরকারি চাল আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। সিনিয়র সহকারী সচিব এ কে এম আনিসুজ্জামানের স্বাক্ষরিত অপর একটি চিঠিতে কেন তাঁকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে জানাতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আলিহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি পত্র এসেছে। ইউপি চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে পরিষদের দায়িত্ব কে পালন করবেন, তা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পত্র এলে জানা যাবে।

প্রজ্ঞাপন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৯ মার্চ আলিহাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা জেলা প্রশাসকের কাছে ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পের কাজে ভুয়া তালিকা করে টাকা আত্মসাৎ, ইউনিয়নের দক্ষিণ ইসবপুর থেকে আলীহাট ও হরিহরপুর থেকে পশ্চিম ইসবপুর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের সামাজিক বন বিভাগের গাছ অবৈধভাবে কেটে বিক্রি করা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় অস্বচ্ছল, বিধবা ও বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া ১ হাজার ৪৭০ জন নারীর নাম অনলাইনে নিবন্ধন করার নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে উৎকোচ নেওয়া এবং অনেকের নাম অনলাইনে নিবন্ধন না করেই ভুয়া কার্ডের মাধ্যমে চাল দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর ৫ এপ্রিল বেলা ১১টায় হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় শুনানিতে স্থানীয় সরকারের একজন বিভাগীয় কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর রংপুর বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার আবু জাফরের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়ের কার্যালয়ে যান। ওই তদন্ত দল ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান, অভিযোগের বাদী আবু মুসা ও উপস্থিত সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় প্রমাণ হিসেবে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন। তদন্ত দল অভিযোগের সত্যতা পায়।