কুমিল্লায় সাবেক এমপি বাহাউদ্দীন, তাঁর মেয়েসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে কুমিল্লায় মামুন আহমেদ ওরফে রাফসান (১৮) নামের এক হোটেল কর্মচারীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলায় কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার ও তাঁর মেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের অপসারিত মেয়র তাহসিন বাহার ওরফে সূচনাসহ ১৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম জানান, নিহত মামুন আহমেদের ভাই মো. রানু মিয়া মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন। নিহত মামুন আহমেদ হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মো. ছালেক মিয়ার ছেলে।
মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম (টুটুল), কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই (বাবলু), বুড়িচং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আখলাক হায়দার, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ (খোকন), মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (সহিদ) ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম (রিন্টু)।
মামলার বাদী মো. রানু মিয়া বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসররা প্রকাশ্যে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেছিল। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আমার ভাই নিহত হন। আমি খুনিদের বিচার চাই।’
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট বেলা তিনটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ক্যান্টনমেন্ট পদচারী–সেতুর নিচে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিল চলছিল। এ সময় তৎকালীন সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার ও তাঁর মেয়ে সূচনার হুকুমে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পিস্তল, একনলা বন্দুক, শটগান, রাইফেল, হাতবোমা, ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। হাতবোমা, ককটেল বিস্ফোরণসহ গুলিতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ক্যান্টনমেন্ট মার্কেটের একটি হোটেলের কর্মচারী মামুন আহমেদ গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা, হত্যাচেষ্টা ও হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় ১২টি মামলা হলো। এ ছাড়া আদালতে আরও বেশ কিছু মামলা হয়েছে।
আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার ও তাঁর মেয়ে তাহসিন বাহার ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে আছেন।