কুমিল্লা বোর্ডে শিক্ষার্থী কম, এক লাখের বেশি আসন ফাঁকা

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড
ফাইল ছবি

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৪৬০ আসনের বিপরীতে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮১ জন শিক্ষার্থী আছে। এ অবস্থায় আসন খালি থাকবে ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৭টি। বোর্ডের অধিভুক্ত ৬ জেলার ৪৬১টি কলেজে অনলাইনে ভর্তির আবেদন চলছে। ১১ জুন পর্যন্ত ফরম পূরণ করা যাবে।

জানতে চাইলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আছাদুজ্জামান বলেন, কলেজের সংখ্যা হয়ে গেছে বেশি। সেই অনুপাতে শিক্ষার্থী নেই। তথ্য–উপাত্ত ছাড়াই কলেজ গড়ে উঠেছে। কিছু কলেজ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যেও গড়ে ওঠে। এসব কলেজ এবার সেই অনুপাতে শিক্ষার্থী পাবে না। তবে মানসম্মত কলেজে ভর্তির প্রতিযোগিতা হবে।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞানে আসনসংখ্যা ৭২ হাজার ৪৯০। এসএসসিতে বিজ্ঞানে পাস করেছে ৫৭ হাজার ৫১৯ জন। বিজ্ঞানে ১৪ হাজার ৯৭১টি আসন ফাঁকা থাকবে। মানবিকে আসনসংখ্যা ৯৫ হাজার ৯৪০। এসএসসিতে পাস করেছে ৩৯ হাজার ৯৭২। মানবিকে আসন ফাঁকা থাকবে ৫৫ হাজার ৯৬৮টি। ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় আসন ৮৯ হাজার ৩০টি। এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে এ বিভাগে ৪৪ হাজার ৫৯০ জন। আসন ফাঁকা থাকবে ৪৪ হাজার ৪৪০টি।
কুমিল্লা জেলার ১৬৯টি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে আসনসংখ্যা ৯২ হাজার ৩৫৫। এ বছর এসএসসি পাস করেছে ৫১ হাজার ৩৯ জন। এ জেলায় আসন বেশি আছে ৪১ হাজার ৩১৬টি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৭৫টি কলেজে আসনসংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৬৫। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ২০ হাজার ৩২৩ জন। আসন বেশি আছে ১৯ হাজার ৪৪২টি। চাঁদপুর জেলার ৭০টি কলেজে আসন ৩৮ হাজার ১৬০। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছে ২২ হাজার ৬৭৩ জন। এ জেলায় আসন বেশি ১৫ হাজার ৪৮৭।
নোয়াখালী জেলার ৬০টি কলেজে আসনসংখ্যা ৩৯ হাজার ৩৬০। এসএসসি পাস করেছে ২১ হাজার ৯০৪ জন। আসন বেশি ১৭ হাজার ৪৫৬টি। লক্ষ্মীপুর জেলার ৪৬টি কলেজে আসনসংখ্যা ২৫ হাজার ২২০। এসএসসি পাস করেছে ১২ হাজার ৭৮০ জন। আসন বেশি ১২ হাজার ৪৪০টি। ফেনী জেলার ৪১টি কলেজে আসনসংখ্যা ২২ হাজার ৬০০। এ বছর এসএসসি পাস করেছে ১৩ হাজার ৩৬২ জন। আসন বেশি ৯ হাজার ২৩৮টি।

বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞানে আসনসংখ্যা ৪৫০। এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েও এ কলেজে নির্ধারিত আসনের বাইরে ভর্তি হতে পারে না ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। এ কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৪৫০ আসন, মানবিকে ৩০০ আসন। জেলার পুরোনো কলেজ হিসেবে এ কলেজে ভর্তি নিয়ে যুদ্ধ হয়।

কলেজের অধ্যক্ষ আবু জাফর খান বলেন, ভিক্টোরিয়া কলেজে আসন ফাঁকা থাকে না। এখানে রীতিমতো ভর্তিযুদ্ধ হয়। সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েও এই কলেজে বিজ্ঞানে অনেকে চান্স পায় না। আবার শত শত কলেজে বিজ্ঞানে আসন ফাঁকা থাকে।

বোর্ডের উপকলেজ পরিদর্শক বিজন কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন,  ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে এসএসসি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ভর্তির নীতিমালা মোতাবেক ভর্তি হতে পারবে। তিন ধাপে আবেদন করে ১১ জুন পর্যন্ত অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে। কলেজ ভর্তি হওয়া যাবে ১৫ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত। একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই।

বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থী ছাড়াও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ও মাদ্রাসার কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে থাকে। এরপরও লাখের ওপরে আসন খালি থাকবে।

বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. নিজামুল করিম বলেন, সব ব্যাচে একই সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকে না। তবে মানসম্মত কলেজগুলোতে ভর্তির চাপ ঠিকই থাকে।