চন্দনাইশে গাছ নিতে বাধা দেওয়ায় বন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা, আহত ৮
চট্টগ্রামের চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ইউনিয়নে কাটা গাছ নিতে বাধা দেওয়ায় বন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পরানজুরানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপির নেতা ও ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে একটি দল তাঁদের ওপর হামলা করেছে।
হামলার ঘটনায় ধোপাছড়ি বিট কর্মকর্তা সুদত্ত চাকমা, ফরেস্টার ইমন বিল্লা, বন নিরাপত্তা প্রহরী আবু বক্কর সিদ্দিক, শুভ ইসলাম, প্রহরীদের তত্ত্বাবধায়ক মো. কুতুবসহ আটজন আহত হয়েছেন বলে বন বিভাগ দাবি করেছে। তবে হামলার এ ঘটনা অস্বীকার করেছেন মোজাম্মেল হক। তিনি ওই ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বলে নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ সূত্রে জানায়, গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে মোজাম্মেল হক ও তাঁর স্বজনসহ ১৫–২০ সদস্যের একটি দল সংরক্ষিত এলাকা পরানজুরানি থেকে সেগুনগাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে—এমন খবর পায় বন বিভাগ। পরে বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তাঁদের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। খবর পেয়ে ধোপাছড়ি ফাঁড়ি পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
জানতে চাইলে দক্ষিণ বন বিভাগের দোহাজারী আঞ্চলিক কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইমরুল কায়েস আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, মোজাম্মেল হকসহ কয়েকজন বনের গাছ পাচার করছেন—এমন সংবাদ পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে অভিযান চালাতে গিয়েছিলেন। বিট কর্মকর্তা সুদত্ত চাকমার নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়েছিল। এ সময় তাঁদের ওপর সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালানো হয়।
তবে হামলার এ অভিযোগ অস্বীকার করেন মোজাম্মেল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গাছগুলো বন বিভাগের নয়, এগুলো স্থানীয় এক বাসিন্দার। গাছগুলো কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় বন বিভাগের কর্মকর্তারা বাধা দিলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসেছিলেন। ঘটনা যাতে বড় না হয় এ কারণে তিনি পুলিশকেও খবর দিয়েছেন।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জেনেছেন। তবে কারা করেছে তদন্তের পর জানা যাবে। খবর পেয়ে ধোপাছড়ি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ ব্যাপারে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধোপাছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) কাঞ্চন কুমার সিংহ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁরা মারামারি দেখতে পাননি। তবে বন বিভাগের লোকজন জামাকাপড় ছেঁড়া অবস্থায় চেয়ারে বসে থাকতে দেখেছেন। সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে বন বিভাগে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।