চট্টগ্রামে পুকুর সেচে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার
চট্টগ্রামের রাউজানে পুকুর সেচে একটি চায়নিজ রাইফেল, একটি শটগান ও সাতটি গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া এসব অস্ত্র-গুলি গত বছরের ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হয়েছিল। আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট বাজারসংলগ্ন আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির পেছনের পুকুর সেচে এসব অস্ত্র গুলি উদ্ধার হয়।
পুলিশ জানায়, উদ্ধার করা অস্ত্র-গুলি প্লাস্টিকের প্যাকেটে আবৃত করে পুকুরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। চট্টগ্রামের রাউজানে এক বিএনপি কর্মীকে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই যুবকের তথ্যে এসব অস্ত্র-গুলি উদ্ধার হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজন হলেন নোয়াপাড়ার চৌধুরীহাটের আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির মুহাম্মদ শওকতের ছেলে মো. সাকিব (২০) ও মুহাম্মদ সোবহানের ছেলে মো. শাহেদ (২৫)। আজ ভোরে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজনের তথ্যে এর আগে ভোরে ৪টি বিদেশি পিস্তল ও ১টি রিভলবার, ৪২টি রাইফেলের গুলি, ১৯টি পিস্তলের গুলি, শটগানের ১৬টি কার্তুজ, ৭টি খালি ম্যাগাজিন, ১টি রকেট ফ্লেয়ার, ২টি রামদা, ৫০টি ইয়াবা ও ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয়। এ ছাড়া ৯৬ হাজার টাকা জব্দ করে পুলিশ।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকায় প্রাইভেট কারে গুলি চালিয়ে বিএনপি কর্মী আবদুল হাকিম হত্যা মামলায় সাকিব ও শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের মাত্র ২০০ মিটার দূরে আবদুল হাকিমকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। তিনি রাউজানে নিজের খামার থেকে চট্টগ্রাম নগরে ফিরছিলেন।
মোটরসাইকেলে আসা ওই অস্ত্রধারীদের গুলিতে আবদুল হাকিমের গাড়িটির চালক মুহাম্মদ ইসমাইলও (৩৮) আহত হন। হাকিমের শরীরে ১০টি গুলির আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। এ ছাড়া গাড়িতে ২২টি গুলির চিহ্ন ছিল। গুলিতে গাড়ির সামনের দুটি চাকাও ফুটো হয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর আবদুল হাকিমের স্ত্রী তাসফিয়া আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন।
হত্যা মামলাটিতে গত সপ্তাহে আবদুল্লাহ খোকন, মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, মুহাম্মদ মারুফ ও মুহাম্মদ সাকলাইন নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে সময় একটি একনলা বন্দুক ও একটি এলজি উদ্ধার হয়। ওই আসামিদের তথ্যেই সাকিব ও শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, পুকুর সেচে যে দুটি অস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা গেছে, সেগুলো গত বছর রাউজান থানা থেকে লুট করা হয়েছিল।
অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, রাউজানের আবদুল হাকিম হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মোট ছয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ঘটনার পরিকল্পনাকারীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, রাউজানে মোট ছয়টি দল সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ সন্ত্রাসী একসঙ্গে থাকতে পারে না। হয় পুলিশ থাকবে, না হয় সন্ত্রাসী থাকবে।