শরীয়তপুরে বেড়ানোর সময় বন বিভাগের কার্যালয়ে আটকে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুরে বন বিভাগের কার্যালয়ে এক নারীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশ সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করেছে।

গত মঙ্গলবার রাত রাত ৯টার দিকে জেলা শহরের মধ্যপাড়া এলাকার বন বিভাগের একটি নির্জন স্থান থেকে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন।

পালং মডেল থানাসূত্রে জানা যায়, ২৫ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ শরীয়তপুরের একটি গ্রামের বাসিন্দা। মা–বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি ভাইয়ের সংসারে থাকতেন। কয়েক বছর আগে বিয়ে করে স্বামীর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। তাঁর দুই সন্তান রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় তিনি স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসেন। এরই মধ্যে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের এক ছাত্রের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। মঙ্গলবার ওই ছাত্রের সঙ্গে দেখা করতে তিনি কলেজের কাছে আসেন। সেখান থেকে দুজন মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়ক ধরে হাঁটতে থাকেন। সন্ধ্যায় সড়কের পাশে বন বিভাগের কাছে কয়েকজন বখাটে তাঁদের আটকে ফেলে। পরে বন বিভাগের ভেতরের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে তাঁদের দুজনকে মারধর করা হয়। ওই সময় এক ব্যক্তি তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ ওই নারী ও তাঁর পরিচিত কলেজছাত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

গতকাল বুধবার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এরপর তিনি পালং মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় মারুফ নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৮ থেকে ১০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা সন্দেহে পুলিশ গতকাল রাতে চারজনকে আটক করেছে।

ভুক্তভোগী নারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এক পূর্বপরিচিত বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। তার সঙ্গে সড়ক দিয়ে হাঁটছিলাম। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় কয়েকজন আমাদের ওপর চড়াও হয়। তারা আমাকে চড়থাপ্পড় মেরে ও আমার বন্ধুকে মারধর করে একটি সরকারি অফিসের ভেতরের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ওই অফিসের ভেতরে থাকা কয়েকজন এ দৃশ্য দেখেন, কিন্তু আমাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেননি। তারা দীর্ঘ সময় আমাকে আটকে রেখে হেনস্তা করেছেন। একজন আমাকে শারীরিকভাবে ক্ষতি করেছে। আমি বাধা দিতে চাইলে আমাকে মারধর করা হয়। ওদের হাতে–পায়ে ধরেছি, তা–ও শোনেনি।’

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন—এমন অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মামলার এজাহারে একজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ তাকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। আর ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে।