সাতছড়িতে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে কালনাগিনীর মৃত্যু

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের প্রবেশদ্বার
ফাইল ছবি

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ভেতর রাস্তায় চলার সময় ট্রাকচাপায় পিষ্ট হয়ে একটি কালনাগিনী সাপ মারা গেছে। রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ সাপটির মৃত্যুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বনের ভেতরে প্রাণীর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

বন বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলেছে ঢাকা-সিলেট পুরোনো মহাসড়ক। সড়কটি বনের ভেতরে হওয়ায় প্রায়ই বনের নানা প্রাণী দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। রোববার দুপুরে বনের একটি কালনাগিনী সাপ সড়ক পারাপার হচ্ছিল। এ সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাকের চাপায় সাপটি মরে যায়।

জীবন চৌধুরী নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী সাপের মরা ছবিতে মন্তব্য করে বলেন, ‘যানবাহনের নিচে পিষ্ট হয়ে আর কত বন্য প্রাণী প্রাণ হারাবে। সাতছড়ির ভেতর দিয়ে চলা মহাসড়কটি সাতছড়ি বনের প্রাণীদের জন্য এখন ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বন কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল আমিন জানান, তাঁরা মৃত সাপটি উদ্ধার করে বনেই মাটি চাপা দিয়েছেন। এ সড়কে অসংখ্য যানবাহন চলাচল করায় ট্রাকটি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। ছয় মাস আগে একটি হরিণ প্রাণ হারায় একইভাবে।

জেলা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কালনাগিনীর বৈজ্ঞানিক নাম (Chrysopelea ornata)। ইংরেজিতে Flying Snake বলা হলেও সাপটি বাস্তবে উড়তে পারে না। সাপটি দেখতে মাথা লম্বা ও চ্যাপ্টা এবং মুখের সামনের দিকে চৌকোনা আকৃতির। এদের দেহের রং পিঠের দিকে সবুজ হয়। আবার হালকা সবুজ রঙের এবং কালচে ডোরাযুক্ত হয়ে থাকে। ঘাড় থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত মেরুদণ্ড বরাবর কমলা রঙের এবং লাল দাগ দেখা যায়। সাপটি সাধারণত পোকামাকড়, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ ও ছোট পাখি ইত্যাদি খেয়ে বাঁচে। হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকাসহ সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা–বাগানে এ ধরনের সাপের বসবাস রয়েছে। এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে এ সাপ। এদের দৈর্ঘ্য ১০০ থেকে ১৭৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়।