নওগাঁয় বিএডিসি ডিলারের বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ, ১৬০ বস্তা সার জব্দ

নওগাঁর ধামইরহাটে জব্দ করা সার। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পূর্ব বাজার এলাকায়ছবি : সংগৃহীত

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিএডিসির এক ডিলারের বিরুদ্ধে সার পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে গুদাম থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় উপজেলার পূর্ব বাজার এলাকা থেকে ১৩০ বস্তা ডিএপি ও ৩০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) টিএসপি সার জব্দ করেন এলাকার লোকজন।

পরে উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এসব সার থানা হেফাজতে রাখা হয়। অভিযুক্ত ডিলারের নাম লিপি রানী সরকার। তিনি ২০২৩ সালে মারা গেছেন। তাঁর ছেলে বিবেক কুমার সরকার ব্যবসা দেখাশোনা করেন। তাঁদের বাড়ি নওগাঁ শহরের কালীতলা এলাকায়। ধামইরহাট সদর ইউনিয়নের জন্য বিএডিসি অনুমোদিত ওই সার ডিলারের প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স সরকার ট্রেডার্স। ধামইরহাট পৌর বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির গুদাম অবস্থিত।

থানা–পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে মেসার্স সরকার ট্রেডার্সের গুদাম থেকে ১৩০ বস্তা ডিএপি ও ৩০ বস্তা টিএসপি সার একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রাক্টরে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। পূর্ব বাজার এলাকায় সোনালী ব্যাংকের সামনে দিয়ে সারবোঝাই ট্রাক্টরটি জব্দ করেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে ধামইরহাট উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও থানা–পুলিশ সেখানে গিয়ে সারসহ ট্রাক্টরটি জব্দ করেন।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বিএডিসির বরাদ্দ করা সার গোপনে অন্যত্র মজুত বা পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। এর আগেও এই ডিলার এ ধরনের কাজ করেছেন। এই ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ করা অন্যত্র পাচার হয়ে যাওয়ায় এলাকায় সারসংকট চলছে। ডিলারের কাছে গেলে কৃষকেরা সার পান না। অথচ বাইরে খোলা বাজারে বিভিন্ন দোকানে সার কিনতে পাওয়া যায়। ওই সব দোকান থেকে কৃষকদের বেশি দামে সার কিনতে হয়। সার পাচার কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সার পাচারের অভিযোগে লিপি রানী সরকারের ডিলারশিপ বাতিলের দাবি জানান এলাকাবাসী।

সার জব্দের বিষয়ে বিবেক কুমার সরকার বলেন, ‘গুদাম থেকে অন্যত্র সার নিচ্ছিলাম, এ কথা সঠিক নয়। বিএডিসি গুদাম থেকে সার উত্তোলন করে ধামইরহাটে গুদামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গাড়িটি যেতে যেতে রাত হয়ে যায়। কিছু লোক ভুল বুঝে সার জব্দ করে থানায় দেয়। আমাদের কাছে বিএডিসি গুদাম থেকে সার উত্তোলন, বৈধ গন্তব্য ও বিতরণ সংক্রান্ত সব কাগজ আছে।’

এ বিষয়ে ধামইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, ‘জব্দ করা সারের বৈধ গন্তব্য ও বিতরণপত্র দেখাতে না পারায় তা থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। সার পাচারের উদ্দেশ্যে বহন করা হচ্ছিল এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট সার ডিলারের লাইসেন্স বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।