ভ্যানচালক বাবার সংসারে এক পা নিয়ে জন্ম নিল শিশুটি

স্বজনদের কোলে জমজ নবজাতক। দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকেছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের একটি ক্লিনিকে জমজ সন্তান প্রসব করেছেন এক নারী। এর মধ্যে এক নবজাতকের কেবল একটি পা রয়েছে, যাতে সাতটি আঙুল। শিশুটির মলদ্বার ও যৌনাঙ্গ নেই।

আজ বুধবার বিকেল ৪টার দিকে পৌর শহরের মডার্ন হেলথ কেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই শিশুর জন্ম হয়। প্রসূতি তাসলিমা বেগমের বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার শালখুরিয়া গ্রামে। তাসলিমার স্বামী মাহফুজুল ইসলাম পেশায় ভ্যানচালক।

ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র পাল প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা পৌনে তিনটার দিকে তাসলিমা বেগমকে তাঁর পরিবারের লোকজন সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিকেল ৪টার দিকে ক্লিনিকের চিকিৎসক ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (মা ও শিশুস্বাস্থ্য) তাহেরা খাতুন ওই নারীর সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করেন। প্রথমে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পরে দ্বিতীয় যে সন্তানের জন্ম হয়, তার একটি পা, মলদ্বার ও যৌনাঙ্গ নেই। এখন পর্যন্ত দুটি সন্তানই সুস্থ আছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাহেরা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের শিশুর জন্ম সাধারণত জেনেটিক্যাল (জিনগত) সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে গর্ভকালে শরীরে ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি বা রুবেলা ভাইরাসের প্রভাবেও এটি হতে পারে। এ ছাড়া ভাইরাল ইনফেকশনের কারণেও এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ শিশুর জন্ম হতে পারে।

তাহেরা খাতুন বলেন, এ ধরনের শিশু সাধারণত বাঁচে না। শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে শিশুর মা–বাবাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

শিশুটির বাবা ভ্যানচালক মাহফুজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হারা (আমি) গরিব মানুষ। ভ্যানের চাকা ঘুরলে হামার সংসারের মানুষগুলার মুখোত ভাত ওঠে। এখন এই ছলটাক (শিশু) নিয়ে মুই কী করমু, সেটাই তো বুঝা পারছো না। দেশের দানশীল মানুষেরা যদি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা করল হয়, তালে পারে ছলটার ভালো চিকিৎসা করে বাঁচানো গেল হনে।’