বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন শ্রমিক নেতারা
ছবি: প্রথম আলো

পোশাক শ্রমিকদের ৭০ ভাগ মূল মজুরিসহ ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার টাকা দাবি করেছে বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন (বিজিএসএফ)। এ ছাড়া পোশাক খাতের জন্য মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ রোববার দুপুরে সাভারের আশুলিয়া শ্রীপুর এলাকায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

বেলা ১১টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের আহ্বায়ক অরবিন্দু ব্যাপারী বিন্দু সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন। সম্মেলনে ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আনসার আলী দুলাল, বিজিএসএফের সাংগঠনিক সম্পাদক আলাল মোল্লা আওয়াল, আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে শ্রমিকের আয় একরকম কমে গেছে বলা যায়। এতে দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপনে শ্রমিকদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বাংলাদেশের শ্রমিকেরা সবচেয়ে কম বেতনে কাজ করে। এটা লজ্জাজনক। মালিকপক্ষ ঠিকই অতিরিক্ত লাভ করে তাঁদের কারখানার সংখ্যা বাড়াচ্ছেন। এখন শ্রমিকদের জীবনযাত্রার ব্যয়ভারকে লক্ষ্য করে, মুদ্রাস্ফীতিকে লক্ষ্য করে দ্রুত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

অরবিন্দু ব্যাপারী বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে মজুরি বোর্ড গঠন করতে হবে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নতুন কাঠামোতে বেতন দিতে হবে। সরকার এটি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে সারা দেশের শ্রমিকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সংগঠনের ১০ দফা দাবিগুলো হলো পোশাকশ্রমিকদের মূল মজুরি ৭০ ভাগ ও মোট মজুরি ২২ হাজার টাকা ঘোষণা, শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমবান্ধব শ্রম আইন প্রণয়ন, মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা, শ্রমিক স্বার্থবিরোধী নিপীড়নমূলক সব নিয়মকানুন বাতিল, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন ও সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে একাধিক ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার নিশ্চিত করা, সব কলকারখানা-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, তাজরীন, রানা প্লাজা, সেজান জুস কারখানাসহ সব ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের’ জন্য দায়ী মালিক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা, কারখানা শ্রমিকদের জন্য কোম্পানির খরচে যাতায়াতব্যবস্থা চালু করা, কোনো কলকারখানা ৬ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে স্থানান্তর করা হলে শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি কারখানায় কলোনি নির্মাণ করে শ্রমিকের বাসস্থান নিশ্চিত করা এবং প্রতিটি শিল্প এলাকায় ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পৃথক শ্রমজীবী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা।

সম্মেলনের শেষ অংশে জেলা, উপজেলা, আঞ্চলিক ও শাখা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে অরবিন্দু ব্যাপারী বিন্দুকে সভাপতি ও প্রদীপ রায়কে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।