তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে সিলেট নগরে জলাবদ্ধতা

সিলেটে তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাঙ্গণ
ছবি: প্রথম আলো

টানা ৩ ঘণ্টায় ১০৮ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিতে সিলেট নগরের অন্তত ৫০টি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আজ সোমবার সকাল ছয়টা থেকে টানা তিন ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি ওঠে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে সেসব এলাকার বাসিন্দারা। তবে কয়েক ঘণ্টা পর দুপুরের দিকে পানি নামতে থাকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে নগরের চৌহাট্টা, দাড়িয়াপাড়া, মিয়া ফাজিলচিশত, শিবগঞ্জ, দরগাগেট, পায়রা, রাজারগলি, ভাতালিয়া, আখালিয়া, কাজলশাহ, রায়নগর, উপশহর, সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, জল্লারপাড়, তালতলা, ঘাসিটুলাসহ অর্ধশতাধিক এলাকার প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া অনেক বাসাবাড়ি ও দোকানপাটের ভেতরেও পানি ঢুকে পড়ে। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও নিচতলায় পানি জমায় শিক্ষার্থী ও রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১০৮ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। মূলত সকালে প্রথম তিন ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

রায়নগর এলাকার বাসিন্দা লিংকন দাশ বলেন, বৃষ্টি শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টার মধ্যেই তাঁদের এলাকায় হাঁটুসমান পানি জমে। অনেক বাসাবাড়ি ও দোকানের মতো তাঁদের বাসার ভেতরেও পানি ওঠে। এতে অনেক জিনিস ভিজে নষ্ট হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এমন জলাবদ্ধতায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দীর্ঘদিনের সমস্যা হলেও তা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে তাঁর অভিযোগ।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. মঈনুল হক বলেন, কলেজের পেছনে মালনী ছড়া (প্রাকৃতিক খাল) ভরাট হয়ে যাওয়ায় সেখানকার পানি উপচে কলেজ ও হাসপাতাল এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা কলেজে আসতে পারেননি। এর ফলে সকালের দিকে পাঠদান সাময়িক বন্ধ ছিল। পানি নেমে যাওয়ার পর পুনরায় স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

ভুক্তভোগী বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, প্রধানত তিনটি কারণে নগরে অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই এখন জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। এগুলো হচ্ছে নগরের ছড়াগুলোয় (প্রাকৃতিক খাল) অপরিকল্পিত উন্নয়নকাজ, অনেক ড্রেনের উন্নয়নকাজ ধীরগতিতে চলায় পানি চলাচলের স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হয়ে পড়া এবং ছড়া-নর্দমার তলদেশে প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্যে ভরাট হয়ে থাকা।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নগরের বিভিন্ন এলাকায় নালা-নর্দমার উন্নয়নকাজ চলছে। এ জন্য স্থানে স্থানে ব্লক তৈরি হয়েছে। তাই ভারী বৃষ্টি হওয়ায় নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গিয়েছিল। তবে কিছুক্ষণ পরই এ পানি নেমে গেছে। উন্নয়নকাজ শেষ হলে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার এমন সমস্যার মুখোমুখি আর হতে হবে না।