লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দেননি নিজাম হাজারী ও তাঁর স্ত্রী, আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ
ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, তাঁর স্ত্রী নূরজাহান বেগমসহ আওয়ামী লীগের চারজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) গ্রহণ করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদের আদালতে চারটি অস্ত্র মামলার পৃথক চারটি অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানি হয়। আদালত অভিযোগপত্রগুলো গ্রহণ করে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠান। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ওই আদালতে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
পুলিশ জানায়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে লাইসেন্স করা অস্ত্রগুলো জমা না দেওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল পুলিশ সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, তাঁর স্ত্রী নূরজাহান বেগম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্ল্যাহ ও ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে চারটি পৃথক মামলা করে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ অভিযুক্ত চারজন পলাতক রয়েছেন।
ফেনী আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম জানান, মামলাগুলো তদন্ত শেষে গত ৩০ জুন ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফেনী সদর আমলি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম কিবরিয়া বলেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে নিজাম উদ্দিন হাজারীর নামে একটি ৩২ বোর এনপিবি পিস্তল ইস্যু হয়। তার স্ত্রীর নুরজাহান বেগমের নামে টু টু বোর রাইফেল এবং মুজিবুল হক ও করিম উল্লাহর নামে একটি করে ১২ বোর শটগান ইস্যু করা হয়। সরকার পরিবর্তনের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চার আসামি তাঁদের নামে ইস্যু করা অস্ত্র জমা দেননি।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই সময়ের মধ্যে ইস্যুকৃত আগ্নেয়াস্ত্রসহ গোলাবারুদ গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে বলা হয়েছে। ওপরে উল্লেখিত চার ব্যক্তি তাঁদের নামে ইস্যুকৃত অস্ত্রগুলো জমা না দেওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
ফেনী আদালতের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন ভূঞা বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার ওপর যে গণহত্যা চালিয়েছে, সেখানে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের নেতাদের এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। বৈধ অস্ত্রগুলো অবৈধ কাজে ব্যবহার করে নির্মম হত্যাযোগ্য চালানোয় আমরা তাঁদের বিচার দাবি করছি।’