চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহে পাচারের সময় ৪০ বস্তা সার জব্দ

চুয়াডাঙ্গা জেলার মানচিত্র

বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) চুয়াডাঙ্গা জেলার সার ডিলারের কাছ থেকে সার কিনে ঝিনাইদহে পাচারের সময় ৪০ বস্তা ইউরিয়া সার জব্দ করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

আজ শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারে সারবাহী আলমসাধু জব্দ করা হয়।

অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা জেলার কর্মকর্তারা জানান, বিসিআইসি সার ডিলার ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আলী রেজার প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে ৪০ বস্তা ইউরিয়া সার কেনেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাদপুকুর গ্রামের খুচরা ব্যবসায়ী আবু তালেব। চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহে নেওয়ার পথে কুতুবপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মুস্তাফিজুর রহমান ও গড়াইটুপি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারে ওই সারবাহী একটি আলমসাধু জব্দ করেন। তাঁরা সারের ক্রেতা আবু তালেবের কাছে ক্রয় রসিদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে ব্যর্থ হন। খবর পেয়ে সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন ও সরোজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। পরে সারভর্তি আলমসাধু পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়।

আবু তালেব কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে স্বীকার করেন, বিসিআইসির সার ডিলার আলী রেজার কাছ থেকে অতিরিক্ত দামে ৪০ বস্তা ইউরিয়া সার কিনেছেন। প্রতি বস্তা সারের দাম ১ হাজার ১ টাকা হলেও তিনি ১ হাজার ২৫০ টাকা দরে কিনেছেন। আবু তালেব প্রথম আলোকে বলেন, এলাকায় হঠাৎ ইউরিয়া সারের সংকট দেখা দেওয়ায় বেশি দামে সার কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন ডিলার আলী রেজার ব্যবস্থাপক আবদুল ওহাব।

কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আগস্টে মাসে জেলা সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ডিলাররা নিজ নিজ ইউনিয়নের কৃষকদের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি করবেন। কৃষকের দোরগোড়ায় সারের সরবরাহ নিশ্চিত করতে ডিলাররা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতি বস্তায় ২০ টাকা কমে এবং খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। কেউ বাড়তি দামে বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এদিকে সার পাচারের ঘটনায় দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামীম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সার ডিলারের ব্যবস্থাপক আবদুল ওহাব অপরাধ স্বীকার করায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯–এর ৪০ ধারায় তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং জব্দ করা সার সরকার নির্ধারিত মূল্যে নিজ ইউনিয়নের কৃষকদের কাছে বিক্রি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।