মাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলের মামলায় বাবার মৃত্যুদণ্ড

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ফন্টু মণ্ডল
ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায় ডালিমা খাতুনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী মো. ফন্টু মণ্ডলকে (৬০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জিয়া হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ফন্টু মণ্ডল আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস গ্রামের মৃত ইসলাম মণ্ডলের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর পুলিশ প্রহরায় তাঁকে কারাগারে নেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. বেলাল হোসেন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিকতায় অভিযোগপত্র গ্রহণের মাত্র তিন মাসের মাথায় রায় ঘোষণা করা হলো। দৃষ্টান্তমূলক রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে।

চলতি বছরের ১৫ মার্চ স্ত্রী ডালিমা খাতুনকে কৌশলে মাঠের ভেতরে নিয়ে হত্যা করেন ফণ্টু মণ্ডল। ১৬ মার্চ ফন্টু মণ্ডলকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মো. জামিরুল ইসলাম বাদী হয়ে বাবা ফন্টু মণ্ডলকে একমাত্র আসামি করে ১৭ মার্চ আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফন্টু মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী ডালিমা খাতুনের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। ১৫ মার্চ সন্ধ্যা ৭ টার দিকে খেত থেকে পেঁয়াজ ওঠানোর কথা বলে ডালিমাকে মাঠে নিয়ে যান ফন্টু মণ্ডল। ধারালো দা দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যার পর সেচপাম্পের পাইপের ভেতরে লাশ লুকিয়ে রাখেন। ১৬ মার্চ ডালিমার বাবার বাড়ির লোকজনের সহায়তায় ফন্টু মণ্ডলকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজ স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও কোদাল জব্দ করা হয়।

তদন্ত শেষে আড়াই মাসের মাথায় ৩১ মে ফন্টু মণ্ডলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশিকুল ইসলাম। আলমডাঙ্গা আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গত ২ জুলাই অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন। এরপর বিচারকাজ শুরু হয়। পরে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জিয়া হায়দার মামলার ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ এ রায় ঘোষণা করেন।