বরিশালে বর্ষবরণে ব্যতিক্রমী শোভাযাত্রা
‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো’—এমন ব্যতিক্রমী স্লোগান নিয়ে বাংলা বর্ষবরণের দিনে বরিশালে ভিন্নতর এক মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করেন একদল তরুণ-যুবক। তাঁদের হাতে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চাই’, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল চাই’—এমন নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মীরা এতে অংশ নেন।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে বরিশাল নগরের ফকির বাড়ি রোডে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়। শোভাযাত্রাটি নগরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার ফকির বাড়ি রোডে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী বাসদের বরিশাল জেলা কমিটির সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তী বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে। আজ মঙ্গল শোভাযাত্রায় যদি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না হয়, তাহলে মঙ্গল শোভাযাত্রার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছাবে না। এ জন্য প্রগতিশীল সংগঠনের কর্মীরা এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে।
শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি সুজয় শুভ বলেন, ‘অমঙ্গলে গোটা দেশ ভরে গেছে। জনগণের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। এই অমঙ্গলের বিরুদ্ধে লড়াই না করে মঙ্গলের আকাঙ্ক্ষা করা যায় না। এর কোনো সুযোগ নেই। তাই মঙ্গল শোভাযাত্রার পর আমরা এ শোভাযাত্রা করেছি।’
এই ব্যতিক্রমী শোভাযাত্রার সংগঠক হুজাইফা রহমান বলেন, ‘সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল—এই তিনটি সংগঠনের উদ্যোগে গঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে। আজ নববর্ষের দিনে আমরা যে মঙ্গল শোভাযাত্রা করছি, সেটা একদিন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবেই শুরু হয়েছিল। আজ দেশের এমন অবস্থায় আমরা মানুষের সত্যিকারের মঙ্গলের জন্য এ ধরনের শোভাযাত্রার আয়োজন করেছি। এ শোভাযাত্রায় মানুষের মঙ্গলের জন্য যা যা প্রয়োজন, আমরা সেই সব বিষয় তুলে ধরেছি।’
এদিকে বরিশালে শুক্রবার সকাল সাতটায় ব্রজমোহন স্কুল প্রাঙ্গণে প্রভাতি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এরপর চারুকলার আয়োজনে সকাল সাড়ে আটটায় মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়।
সকাল সাতটা থেকে খেলাঘর অশ্বিনীকুমার হলের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষ বরণ করে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের শোভাযাত্রা বের হয়। লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় শিল্পকলা একাডেমিতে। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পৃথক বর্ষবরণের আয়োজন করে। এবার উদীচীর আয়োজনে তিন দিনের মেলা হবে ব্রজমোহন বিদ্যালয় মাঠে।