পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে দুই নেতার বিরোধ

পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদনের বিষয়ে সমন্বয়হীনতার কারণে সভাপতি ও সম্পাদককে ঢাকায় ডাকা হয়েছে।

যশোরে আওয়ামী লীগের পাঁচটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে শীর্ষ দুই নেতার বিরোধ আরও তীব্র হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের স্বাক্ষর ছাড়াই গত দুই দিনে মনিরামপুর, ঝিকরগাছা ও বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন।

এর আগে সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সম্মতিতে যশোর পৌর ও অভয়নগর উপজেলা কমিটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় বলে দলের কয়েকজন নেতা জানান।

গত শনিবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে মনিরামপুর ও ঝিকরগাছা এবং গতকাল রোববার বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

এদিকে মনিরামপুরের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্যের স্বাক্ষর থাকলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেনের স্বাক্ষর নেই। অপর দুটি কমিটিতে ঝিকরগাছার সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মুসা মাহমুদ এবং বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রণজিৎ রায় ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আলীর স্বাক্ষর রয়েছে। তিনটি কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র সমালোচনা চলছে।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও অনুমোদনের বিষয়ে শাহীন চাকলাদার উদাসীন। যে কারণে আমি সভাপতি হিসেবে মনিরামপুর, ঝিকরগাছা ও বাঘারপাড়া উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দিয়েছি। এখন সংযোজন-বিয়োজন যা করার কেন্দ্র থেকে করবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির দুই দফা সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু সভাপতি শহিদুল ইসলাম কমিটির তালিকায় স্বাক্ষর করেননি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করে জেলা কমিটির কাছে পাঠাবেন। জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সেটা অনুমোদন করবেন। কিন্তু সভাপতি দলের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির জন্য গঠনতন্ত্র বহির্ভূত কাজ করেছেন।

এদিকে বিষয়টি কেন্দ্র আওয়ামী লীগের নজরে আসায় জেলা ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিটির সদস্যদের মঙ্গলবার ঢাকায় তলব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দলের কয়েকটি ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদনের বিষয়ে সমন্বয়হীনতার কারণে খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আমাদের ডেকেছেন।’

এ বিষয়ে শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যশোর পৌর ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তালিকা কেন্দ্র ও জেলায় পাঠান। এখানে আমার সম্মতি দেওয়ার কিছু নেই।’