সড়কে পড়ে থাকে বর্জ্য, ব্যবস্থাপনায় বড় ঘাটতি

নুরুন্নবী, আবদুর রউফ,সাইফুল ইসলাম, শাহাজাদা আরমান,হারুন অর রশীদ ও আকরাম হোসেন
ছবি: প্রথম আলো

রংপুর নগরের আলমনগর কলোনি এলাকায় একটা বাড়ির দেয়াল ঘেঁষে তৈরি হয়েছে আরেকটা বাড়ি। এক মহল্লা থেকে অন্য মহল্লায় যাওয়ার পথ সরু। রাস্তা, গলির মাথা ও বাড়ির সামনে পড়ে আছে আবর্জনার স্তূপ। নেই ডাস্টবিন। এ ঘিঞ্জি পরিবেশেই থাকছেন এলাকার মানুষ। 

আলমনগর কলোনি, পীরপুর, আলমনগর, মুসলিমপাড়া, রেলওয়ে পশ্চিমপাড়া, বাবুপাড়া ও আলমনগর খামার এলাকা নিয়ে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড। সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের রেলস্টেশনের পাশের এসব এলাকায় বসবাস করেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এসব এলাকায় অবাঙালিদের ক্যাম্পও রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, এ এলাকায় বসবাস করা বেশির ভাগ মানুষই নির্মাণশ্রমিক। রেলস্টেশন এলাকায় ছোট ছোট কারখানায় কাজ করেন অনেকে। কেউ কেউ আবার গলির সামনে পুরোনো কাপড়ের ব্যবসাও করেন। 

এই ওয়ার্ডের পীরপুর এলাকার বাসিন্দা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামীম তালুকদার বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডটি এমনিতেই ঘিঞ্জি; কিছুটা অপরিচ্ছন্ন। পয়োনিষ্কাশনের জন্য নালা থাকলেও পানি যায় না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও দুর্বল। নগরের এই ওয়ার্ড সেই আদি আমলের মতোই রয়ে গেছে। খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত কোনো মাঠও নেই।’

২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ–সমর্থক হারুন অর রশীদ বলেন, এখানে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করার জন্য মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে রোগী পরিবহনের জন্য জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু রয়েছে। পুনরায় নির্বাচিত হলে এলাকার মান উন্নয়নে পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা আরও জোরদার করবেন। সেই সঙ্গে শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদনের জন্য কিছু একটা করারও চেষ্টা থাকবে। 

এই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী আকরাম হোসেন (স্বতন্ত্র) বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি কলোনির অলিগলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করবেন। সেই সঙ্গে মানুষের চলাচলে পর্যাপ্ত সড়কবাতির ব্যবস্থা করবেন। 

রবার্টসনগঞ্জ, বাবুপাড়া, হেলাল জুট প্রেস, আদর্শপাড়া, রেলওয়ে পূর্ব গেট, নূরপুর, মহাদেবপুর, ঠিকাদারপাড়া ও জেএনসি রোড এলাকা নিয়ে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। সরেজমিন দেখা যায়, বসবাসের জন্য নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকার সড়কগুলো পাকা হলেও সেগুলো অপ্রশস্ত। পাশাপাশি দুটি গাড়ি যাওয়া কষ্টকর। সড়কবাতি থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। সড়কের যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে আছে। 

২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই পাঁচ বছরে এলাকার উন্নয়নে নানা রকম কাজ করেছেন। কাঁচা রাস্তাগুলো পাকা করেছেন। অলিগলির সড়কে সড়কবাতি বসানো হয়েছে।

এই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ও কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা আরমান বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি মাদকমুক্ত ওয়ার্ড গঠনে ভূমিকা রাখবেন।

২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন মিস্ত্রিপাড়া, নিউ শালবন, শালবন, পূর্ব শালবন, শাহীপাড়া ও কামালকাছনা উত্তরাংশ এলাকা। সরেজমিন দেখা গেছে, প্রধান সড়কগুলো পাকা। সড়কবাতিও পর্যাপ্ত। রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পূর্ব দিকে শালবন মিস্ত্রিপাড়া এলাকার সড়কটিতে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। 

তবে এলাকার লোকজন বলেন, নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করা দরকার। এলাকায় নতুন নতুন বসতবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। মানুষ বেড়েই চলেছে। বর্জ্যের পরিমাণও বাড়ছে। সে অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডাস্টবিন নির্মাণ করা হয়নি। 

২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নূরুন্নবী ফুলু (স্বতন্ত্র) বলেন, ‘আমি সব সময় মানুষের পাশে থেকেছি। সবার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি।’

ওই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুর রউফ সরকার বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা করবেন।