জরাজীর্ণ ঘরে অশীতিপর জবিলার মানবেতর জীবন

শেরপুরের শ্রীবরদীতে জরাজীর্ণ ঘরের সামনে অশীতিপর জবিলা খাতুন। রোববার সকালে উপজেলার উত্তর মাটিয়াকুড়া গ্রামে
ছবি: দেবাশীষ সাহা রায়

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় জরাজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অশীতিপর জবিলা খাতুন (৯২)। সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে ওই জরাজীর্ণ ঘরে দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েন তিনি। এ বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে সরকারের কাছে একটি ঘর চেয়েছেন তিনি।

জবিলা উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়নের উত্তর মাটিয়াকুড়া এলাকার মৃত নুশে খাঁর স্ত্রী। প্রায় তিন যুগ আগে তাঁর স্বামী মারা গেছেন। তাঁর এক ছেলে আবদুর রহিম ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। রহিম ঢাকায় থাকায় রহিমের ছেলে মো. মালেক দাদি জবিলার দেখাশোনা করেন।

রোববার সকালে উপজেলার উত্তর মাটিয়াকুড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট্ট একটি টিনের ঝুপড়ির ভাঙা চকিতে অসহায়ভাবে শুয়ে আছেন বৃদ্ধ জবিলা। ঘরে বেড়া নেই বললেই চলে। ঘরে ছেঁড়া পলিথিন দিয়ে সামান্য ছাউনি দেওয়া হয়েছে। রোদ-বৃষ্টি খুব সহজেই ঘরে প্রবেশ করে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ জবিলা চলাফেরা করতে পারেন না। দু-একটি কথা বলেন, তা–ও অস্পষ্ট।

জবিলার নাতি মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গরিব মানুষ। রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। তাঁর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। স্ত্রী, দাদিসহ পরিবারের সদস্য আটজন। সামান্য আয়ে সংসার চালানো কষ্টের। এর মধ্যে দাদি জবিলার ভরণপোষণ তিনিই (মালেক) চালান। তাঁর থাকার ঘরটিও জরাজীর্ণ। ভাত জোগাড় করাই যেখানে কঠিন, সেখানে ঘর করে দেবেন কীভাবে?

মালেক আরও বলেন, তাঁর দাদি জবিলা বয়স্ক ভাতা পান। তাঁদের ২ শতাংশ জমি আছে। সরকার থেকে ওই জমিতে একটি ঘর করে দিলে বৃদ্ধ দাদিকে নিয়ে একটু শান্তিতে থাকতে পারতেন। তাই দাদির জন্য একটি ঘর চেয়েছেন মালেক।

উত্তর মাটিয়াকুড়া গ্রামের বাসিন্দা লিটন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, দরিদ্র বৃদ্ধ জবিলা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাঁর নাতি তাঁকে খুব কষ্টে ভরণপোষণ দেন। সরকারিভাবে একটি ঘর দিলে তাঁদের খুব উপকার হতো।

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফতেখার ইউনুস প্রথম আলোকে বলেন, শিগগিরই তিনি জবিলাকে দেখতে যাবেন। তাঁর জরাজীর্ণ ঘরটি মেরামত বা সংস্কার করাসহ তাঁকে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।