সুন্দরবনে যৌথ অভিযান চালিয়ে হরিণের চারটি পাসহ মাংস উদ্ধার

সুন্দরবনের চরে চড়ে বেড়াচ্ছে হরিণ। সম্প্রতি সুন্দরবনের চান্দাবুনিয়া খালের পাড়ে
ছবি: প্রথম আলো

গহিন সুন্দরবনে অবৈধভাবে শিকার করা হরিণের চারটি পাসহ ছয় কেজি মাংস উদ্ধার করেছেন খুলনার নলিয়ান কোস্টগার্ড ও বন বিভাগের কয়রা টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার সরদার পাড়া গ্রামে এ যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়।

সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার সরদার পাড়া গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, গ্রামের পাশের একটি ছোট নদী পেরোলেই সুন্দরবনের গহিন জঙ্গল। পেশাদার হরিণশিকারিরা গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে নাইলনের দড়ির একধরনের ফাঁদ হরিণের নিয়মিত যাতায়াতের পথে পেতে রাখেন। চলাচলের সময় হরিণগুলো সেই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণ জবাই করে মাংস বিক্রি করা হয়।

কয়রা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুকুল ইসলাম জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন, সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে মাংসসহ নদী পার হয়ে লোকালয়ে ফিরছেন। এরপর কোস্টগার্ডের সঙ্গে তাঁরা যৌথ অভিযানে নেমে সুন্দরবনসংলগ্ন সরদার পাড়া গ্রামে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে জঙ্গলের ভেতর থেকে দুটি নৌকায় আটজন লোককে নদী পেরিয়ে লোকালয়ের দিকে আসতে দেখেন।

বন কর্মকর্তা ফারুকুল বলেন, ‘হরিণশিকারিদের নৌকা আমাদের কাছাকাছি পৌঁছাতেই আমরা তাঁদের ধাওয়া করি। আমাদের উপস্থিতি দেখেই শিকারির দল তাঁদের নৌকা নদীতে ডুবিয়ে দিয়ে সাঁতরে বিভিন্ন জায়গা দিয়ে লোকালয়ে ঢুকে আত্মগোপন করে। তবে পালানোর সময় টর্চ লাইটের আলোতে শিকারিদের আমরা দেখে চিনে ফেলেছি। স্থানীয় বাসিন্দা শিকারি হারুন সরদার পালানোর সময় সড়কের ওপর তার হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ ফেলে যান। এর ভেতরেই চারটি পাসহ ছয় কেজি হরিণের মাংস পেয়েছি।’

সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আজ রবিবার সকালে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বন্য প্রাণী নিধন আইনে মামলা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে হরিণের মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।