দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে ঝলমলে রোদে স্বস্তি

রোদে কাপড় শুকাতে দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার দিনাজপুর সদর উপজেলার কাঞ্চন সেতুর নিচে
ছবি: প্রথম আলো

চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে কয়েকবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে এ জেলায়। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ। তবে ঝলমলে রোদে ঠান্ডা, কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে বিপাকে পড়া মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

তাপমাত্রা কম হলেও চার দিন ধরে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে। আর তাতেই যেন প্রাণ ফিরে পাচ্ছে প্রাণ ও প্রকৃতি। খুব বেশি তাপ না থাকলেও ঝলমলে রোদ থাকছে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। শ্রমজীবী মানুষদের মধ্যে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য।

সোমবার দুপুরে আলাপচারিতায় দিনাজপুর শহরের বালুয়াডাঙ্গা এলাকার গুলসানা বেগম (৪০)বলেন, ‘দুই সপ্তাহের বেশি ঠিকমতো ঘরদোর, কাপড়চোপড় পরিষ্কার করা যায়নি। কী একটা অবস্থা গেল! আজ সকালে রোদ ওঠায় ঘরদোর, কাপড়চোপড় ধোয়ামোছার কাজ করা গেল। খুব ভালো লাগছে।’

প্রায় এক মাস ধরে হিমেল বাতাস ও তীব্র ঠান্ডায় সন্ধ্যার পর হতেই ঘরমুখী হতে শুরু করে মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো কুয়াশা ঝরেছে। দিনের পুরোটা সময় দেখা মেলেনি সূর্যের আলোর। সেই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত চার দিনে কুয়াশা যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে বাতাসের গতিও।

দুপুরে শহরের জেল মোড় এলাকায় আবদুস সাত্তার (৪৬) বলেন, ‘ভাই রে, অনেক দিন পর শীত দেখা গেইল। এইবারকার মতোন শীত গত কয়েক বছরে পড়ে নাই। পানিখান পর্যন্ত লাড়া যাছে না। গোসল তো দূরের কথা।’

রোদের দেখা পেয়ে আনন্দিত কৃষকেরা। চিরিরবন্দর উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকার কৃষক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আলুখেত নিয়ে খুব পেরেশানিতে আছি। শীতে গাছগিলা মরি যাবার ধরিছে। আইজকার মতোন রোদ আর ১০-১৫ দিন পোয়া গেইলে আলুর তেমন ক্ষতি হইবে না। রোদ ওঠায় টেনশন এংনা কমি যাবার ধরিছে। সবচেয়ে বেশি টেনশন কৃষকের। অনেকেই আছি ধার মহাজন করি আবাদ করছে। খেত একেবারে নষ্ট হলে কী হবি, তোরায় কন তো।’

তবে কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে ফসলের বড় ওষুধ হচ্ছে সূর্যের আলো। ঠান্ডায় ফসলের ক্ষতি হয় না। ক্ষতি হয় কুয়াশায়। যেহেতু চার দিন ধরে দিনের বেলা রোদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে, সুতরাং ফসল নষ্ট হওয়ার চিন্তুা কিছুটা কমেছে। কৃষকের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তারপর কৃষি বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী মাঠে আছেন। কোন সময় কোন কীটনাশক কিংবা সার প্রয়োগ করতে হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’