গাজীপুরে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো শ্রমিকনেতাকে, এক দিনের রিমান্ডে

বাবুল হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনকে আটকের পর বুধবার বিকেলে গাড়ি পোড়ানোর এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাঁর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে আটক করে। মামলায় কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম। গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতা বাবুল হোসেন মাগুরা সদর এলাকার আতাউর রহমানের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার ভাদাইল গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে মোগরখাল এলাকায় শ্রমিকেরা একটি গাড়ি পোড়ান। ওই ঘটনায় বাসন থানায় করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ডিবি পুলিশ বাবুলকে থানায় হস্তান্তর করে। তিনি ওই শ্রমিক আন্দোলনে ইন্ধন দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরে তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাঁর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার আজ বুধবার সকালে এক বিবৃতিতে অবিলম্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনকে নিরাপদে সুস্থ শরীরে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। আটক করে, গুম করে, ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে রাষ্ট্র শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করতে চাইছে।

আরও পড়ুন

গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাবুল হোসেন মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকেরা সম্প্রতি আন্দোলন শুরু করেন। সে আন্দোলনের অন্যতম নেতা বাবুল হোসেন সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত শ্রমিক পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে এবং গাজীপুরের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে তিনি গতকাল আশুলিয়া থেকে গাজীপুরের দিকে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সর্বশেষ ফোনে কথা হলে বলেছিলেন, তিনি একটি বাসে উঠেছেন। এর পর থেকে তাঁর পরিবার ও সংগঠন কেউ আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।

আরও পড়ুন

সন্ধ্যায় তাসলিমা আখতার আরও বলেন, বাবুল ৩০ তারিখ ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। এটা পুরোই একটি মিথ্যা মামলা। যেন শ্রমিকেরা কোনো কথা বলতে না পারেন, ভয় পান, তাই এ পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। তাঁরা যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন করছেন, সে জন্য তাঁদের টার্গেট করা হয়েছে। তাঁরা আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি মাঠের লড়াইও করবেন।