ছুটিতে বরিশালের যেসব এলাকায় দেখা যাবে নদী-প্রকৃতির সৌন্দর্য

বরিশালের কীর্তনখোলা নদীফাইল ছবি: প্রথম আলো

ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব মিলে ঘুরতে বের হন অনেকেই। এবার ঈদের উৎসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পয়লা বৈশাখ। ঈদের ছুটির সঙ্গে পয়লা বৈশাখের ছুটি মিলে একটা লম্বা অবকাশ এবার। এই সময়ে বরিশালের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তার একটি তালিকা থাকল।

দক্ষিণের বিভাগীয় শহরটি কীর্তনখোলা নদীর তীর ঘিরে গড়ে উঠেছে। নগরের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে একসময়ের প্রমত্ত কীর্তনখোলা। এ জন্য নগরবাসীর হৃদয়ের সঙ্গে নদীর গভীর যোগসূত্র। আর সেই সূত্রেই বরিশাল নগরে এই নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ত্রিশ গোডাউন, মুক্তিযোদ্ধা পার্কসহ অন্যান্য স্থাপনা। ঈদ অথবা যেকোনো উৎসব-পার্বণে বরিশাল নগরের কীর্তনখোলা তীরের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় থাকে। শিশুদের কলকাকলিতে মুখর হয় নগরের প্ল্যানেট পার্ক নামের শিশু পার্কটি।

ত্রিশ গোডাউন রিভারভিউ পার্ক

কীর্তনখোলা নদীর পাড় ঘিরে খাদ্য বিভাগের ৩০টির বেশি খাদ্যগুদাম গড়ে ওঠায় এলাকাটির এমন নাম। এই ৩০ গোডাউনকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে ত্রিশ গোডাউন রিভারভিউ পার্ক ও বধ্যভূমি। নদী তীরে প্রশস্ত বাঁধ দিয়ে এর ওপর রাস্তা বানানো হয়েছে। নদীর উথাল বাতাস উপভোগ করতে আশপাশের মানুষ সব সময় এখানে আসেন। এখানে গড়ে উঠছে মুখরোচক খাবারের দোকান। আছে নদী ভ্রমণের জন্য ট্রলার ও নৌকা। ঘণ্টায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় এসব নৌকায় ভ্রমণ করা যায় কীর্তনখোলা নদীতে।

মুক্তিযোদ্ধা পার্ক

বরিশাল নগরের বান্দরোডে কীর্তনখোলা নদী ঘিরে গড়ে উঠেছে আরেক বিনোদনকেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধা পার্ক। ঝাউ-কাঠবাদাম, নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল ও বনজ গাছে ছায়া সুনিবিড় এই পার্কে এলে নগরের ইটপাথর আর কোলাহল থেকে একটু স্বস্তি মেলে।

ইট-পাথরের নগরের কোলাহল থেকে স্বস্তি মেলে কীর্তনখোলা তীরের মুক্তিযোদ্ধা পার্কে
ছবি: প্রথম আলো

৪ হাজার ২০০ বর্গমিটার আয়তনের পার্কটিতে বসার আসন আছে ৬২টি। নদীতীরের প্রশস্ত সড়ক ধরে হেঁটে কীর্তনখোলার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এখান থেকে। এখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ট্রলারে ভ্রমণ করা যায় নদী। যাওয়া যায় ত্রিশ গোডাউন রিভারভিউ পার্কে। বিনা মূল্যে পার্কটি ঘুরে দেখার সুযোগ থাকায় নগরবাসীর কাছে পার্কটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

প্ল্যানেট পার্ক

বরিশালে যতগুলো শিশু বিনোদনকেন্দ্র আছে, তার মধ্যে অন্যতম বান্দরোডের প্ল্যানেট পার্ক। পার্কটির সুপারভাইজার এ কে এম খালেকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ৩৫ টাকা প্রবেশ ফি এই পার্কের। ভেতরে আছে শিশুদের জন্য ৮টি রাইড। প্রতিটি রাইডের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। রাইডগুলোর মধ্যে আছে প্লেন, ট্রেন, হর্স রাইডার, সুপার চেয়ার, ফ্লাওয়ার কাপ, শান্তা মারিয়া, প্যাডেল বোট ও প্যারাট্রুপার। এ ছাড়া পুরো পার্কের মধ্যে শিশুদের জন্য আছে রাইড ছাড়াও ঘুরে দেখার মতো নানা স্থান।

বরিশালের প্ল্যানেট পার্কের একাংশ
ছবি: প্রথম আলো

পার্কটির ব্যবস্থাপক মো. সোহরাব আলী বলেন, সাধারণত পার্কটি সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে ঈদের দিনসহ এর পরের কয়েক দিন ভিড় বেশি হওয়ায় রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

বরিশালে শিশুদের বিনোদনের জন্য আছে প্ল্যানেট পার্ক
ছবি: প্রথম আলো

আর যা আছে

ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন দেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা থেকে। এ ছাড়া বরিশাল নগরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যান, উজিরপুরের গুঠিয়ার বায়তুল আমান জামে মসজিদ, বরিশাল সদরের তালতলী ও চরবাড়িয়ায় কীর্তনখোলা তীরে নতুন গড়ে ওঠা বিনোদনকেন্দ্র, কীর্তনখোলার পূর্বপাড়ে এডামস পার্ক। এসব এলাকায় ঘুরতে গেলে পেতে পারেন নদী আর প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য। পাশাপাশি শহুরে কোলাহল আর ইটপাথরের জীবনের বাইরে এক নির্মল প্রশান্তি।

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় আসেন অনেক পর্যটক
ফাইল ছবি: প্রথম আলো