স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করতে গিয়ে মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার ৩
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে (১১) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করতে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির করা মারধরের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন স্কুলছাত্রীর বাবা, ভাই ও চাচা। গতকাল সোমবার দিবাগতর রাত সাড়ে ১২টার পর বোদা থানার পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার দেখায়। পাশাপাশি তাঁদের দেওয়া ধর্ষণচেষ্টার মামলাটিও নথিভুক্ত করেছে পুলিশ।
পাল্টাপাল্টি মামলা করার পরিবার দুটি প্রতিবেশী এবং তাঁদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠা ব্যক্তির নাম আশিকুজ্জামান মানিক (৪৫)। তিনি উপজেলার একটি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য।
এ বিষয়ে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এর মাধ্যমে খবর পেয়ে আশিকুজ্জামানকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি মারধরের অভিযোগে একটা মামলা দিয়েছেন। এই মামলা দেওয়ার কথা শুনে রাত ১২টার পর ওই স্কুলছাত্রীর বাবাসহ কয়েকজন একটি ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে আসেন। পরে সেই মামলাও নিয়েছেন। তবে থানায় আসা তিনজন আগে করা মামলার এজাহারনামীয় আসামি হওয়ায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ধর্ষণচেষ্টার মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ওই স্কুলছাত্রী প্রতিবেশী আশিকুজ্জামানের বাড়ির সামনে তাঁর মেয়েদের সঙ্গে খেলছিল। এ সময় আশিকুজ্জামান তাদের তিনজনকে টেলিভিশন দেখানোর কথা বলে ঘরে নিয়ে যান। পরে আশিকুজ্জামান তাঁর মেয়েসহ অপর একটি মেয়েশিশুকে ভয় দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। এতে ওই স্কুলছাত্রীও ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এ সময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আশিকুজ্জামান তাঁর বাড়ির একটি গলিতে ওই স্কুলছাত্রীর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে তাকে প্রথমে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে আশিকুজ্জামানের ভাষ্য, ওই মেয়ে শ্বশুরবাড়ির সম্পর্কে তাঁর ভতিজি হয়। তাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তাঁর মেয়েদের সঙ্গে তারা অতিরিক্ত সাউন্ড দিয়ে ঘরে টিভি দেখছিল। এ সময় তিনি সবার পিঠে একটা করে বাড়ি দিয়ে চলে যেতে বলেন আর টিভি বন্ধ করে দেন। এরপর তিনি গরুর খাবারের জন্য ঘাস কাটতে মাঠে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পরই অভিযুক্ত ব্যক্তির ছেলে একটি ছুরি নিয়ে তাঁকে ডাকতে যান। কী হয়েছে জানতে চাইলেও কোনো উত্তর না দিয়ে তাঁকে তাঁদের বাড়ির দিকে নিয়ে যান। এ সময় পথে তাঁদের পরিবারের অরও কয়েকজন এক হয়ে তাঁকে মারপিট শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে জানতে পেরেছেন, পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। পরে রাতেই তিনি মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন। জমি দখল নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
মারধরের বিষয়ে ওই স্কুলছাত্রীর মা বলেন, ‘দুপুরে ঘটনাটা শুনে আমার ছেলে মানিককে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মেরেছিল।’