গাজীপুরে ডিবি পরিচয়ে গুদামে ঢুকে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৭

গ্রেপ্তারের সময় ওই সাতজনের কাছ থেকে অটোরিকশার ব্যাটারি, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম ও ৬টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

গ্রেপ্তারের সময় ওই সাতজনের কাছ থেকে ১০৩টি অটোরিকশার ব্যাটারি, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম ও ৬টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছেপুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য সেজে ব্যাটারির গুদামে ঢুকে লোকজনকে জিম্মি করে নগদ টাকা ও গুদামের মালামাল লুট করার অভিযোগে ডাকাত চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী কলেজ গেট এলাকা থেকে মিজানুর রহমান (৫৭) নামের এক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।

আজ শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এসব তথ্য জানান গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. ইব্রাহিম খান।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আরিফুল ইসলাম ওরফে সোহান (৩০), মমিনুল ইসলাম ওরফে মমিন ওরফে রুপচান (৩৫), বিল্লাল ওরফে নজরুল (৪০), মো. শফিকুল ইসলাম (৩২), মো. রুবেল (২৯), মো. জাকির হোসেন (৪২) ও মিজানুর রহমান (৫৭)। তাঁদের বিরুদ্ধে গাজীপুর ও ঢাকায় বিভিন্ন থানায় ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় ওই সাতজনের কাছ থেকে ১০৩টি অটোরিকশার ব্যাটারি, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম ও ৬টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।

উপকমিশনার মো. ইব্রাহিম খান বলেন, ৬ এপ্রিল গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন দেশীপাড়া এলাকায় জ্যাক ব্যাটারির গুদামে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই দিন গুদামের কর্মচারীরা ইফতার শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় অজ্ঞাতানামা ৮–১০ ব্যক্তি গুদামের ভেতরে ঢুকে নিজেদের ডিবি পুলিশ বলে দাবি করেন। খুনের আসামি শনাক্ত করতে গুদামের প্রত্যেক কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, এমন কথা বলে কৌশলে গুদামের সবার  মুঠোফোন নিয়ে নেওয়া হয়। পরে সব কর্মচারীকে গুদামের একটি কক্ষে নিয়ে দ্রুত তাঁদের হাত-পা বেঁধে ফেলে ডাকাতেরা। এ সুযোগে ডাকাতেরা গুদামের ভেতর থেকে অটোরিকশা ও আইপিএসের ব্যাটারি ট্রাকে তুলে নেয়। এ ছাড়া গুদামে থাকা পুরোনো পরিবর্তনযোগ্য ব্যাটারি, নগদ তিন লাখ টাকা, কর্মচারীদের ব্যবহৃত ১৪টি মুঠোফোন, সিসিটিভি ক্যামেরার যন্ত্রাংশসহ আনুমানিক ১৮ লাখ টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায় দলটি।

পুলিশ জানায়, ডাকাতির ঘটনায় গাজীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ৮–১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার পর থেকে সদর থানার একাধিক দল তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে ১৪ এপ্রিল বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী কলেজ গেট এলাকা থেকে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজেন্দ্রপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তাঁরা ব্যাটারিগুলো রাজধানীর বাবুবাজার এলাকায় এক দোকানে বিক্রি করেছেন।

আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কান্দুলী এলাকায় আসামি সুমনের ব্যাটারি ভাঙার কারখানা থেকে লুট করা ব্যাটারির মধ্যে ১০৩টি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক, একটি ডিবির জ্যাকেট, একটি খেলনা পিস্তল, এক সেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পোশাক, পুলিশের এক জোড়া জুতা, পুলিশের টুপি, বেল্ট, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামসহ ছয়টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মো. সামসুর রহমান, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ প্রমুখ।