বসতবাড়িতে ১০ ফুট লম্বা অজগর, সুন্দরবনে অবমুক্ত

উদ্ধার হওয়া অজগরটি করমজলের বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
ছবি : প্রথম আলো

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার এক বাড়ি থেকে সাড়ে ১০ ফুট লম্বা একটি অজগর উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। আজ রোববার সকালে উপজেলার চিলা ইউনিয়নের উলুকাটা গ্রামের সোহাগ শেখের বাড়ি থেকে অজগরটি উদ্ধার করা হয়।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, ১০ ফুট ৬ ইঞ্চি লম্বা অজগরটির ওজন ২০ কেজি। লোকালয় থেকে উদ্ধারের পর এটিকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে। খাবারের সন্ধানে বা উপযুক্ত পরিবেশের খোঁজে অজগরটি বন ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসে বলে ধারণা তাঁদের।

সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, উলুকাটা গ্রামের সোহাগ শেখের বসতবাড়িতে সকাল ৬টার দিকে সুন্দরবনের একটি অজগর ঢুকে পড়ে। স্থানীয় লোকজন সাপটি একটি জালের সাহায্যে আটকে রেখে তাঁদের খবর দেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বনপ্রহরীদের নিয়ে সাপটি উদ্ধার করা হয়। বেলা ১১টার দিকে অজগরটিকে এনে করমজলের বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

আজাদ কবির আরও বলেন, সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির সাপ সাধারণত বনের অভ্যন্তরের উঁচু স্থানে ডিম পেড়ে থাকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন, পূর্ণিমা ও অমাবস্যা উঁচু জোয়ারে বনের অভ্যন্তরের উঁচু সেসব জায়গা প্লাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কারণে সাপগুলো অনেক সময় ডিম পাড়তে নদী-খাল সাঁতরে লোকালয়ের উঁচু জায়গায় ঢুকে পড়ছে। ডিম দেওয়া বড় সাপগুলো লোকালয়ে ডিম পাড়ার পর সেই স্থানের আশপাশে বিচরণ করে থাকে।

এ ছাড়া খাবারের সন্ধানেও লোকালয়ে এসব সাপ চলে যেতে পারে। বনসংলগ্ন লোকালয়ের বাড়িঘরে ঢুকে সহজেই অজগর হাঁস-মুরগি ধরে খেতে পারে। এখন পর্যন্ত লোকালয় থেকে যেসব অজগর উদ্ধার হয়েছে, তার বেশির ভাগই হয়েছে বাড়িঘরের হাঁস-মুরগির খোপ, ঘর বা এর আশপাশ থেকে।

করমজল বন্য প্রাণী কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত কেবল মোংলা এলাকার লোকালয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি হরিণ, দুটি গোখরো (কিং কোবরা) সাপ, দুটি কুমির, চারটি অজগর, একটি তক্ষক ও কচ্ছপ করমজলের বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের বিভিন্ন পার্ক থেকে উদ্ধার হওয়া কুমির, অজগরসহ নানা প্রজাতির আরও ২৪টি বন্য প্রাণী এখানে ছাড়া হয়েছে।