মায়ের পরিয়ে দেওয়া শাড়িতে ঈদের দিন কেটেছে ফুটবলার সানজিদার

ফুটবলার সানজিদা আক্তার
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

নিয়মিত থাকেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) অধীনে আবাসিক ক্যাম্পে। বছরজুড়ে ফুটবল নিয়ে তাঁর ব্যস্ততা থাকে। কখনো অনুশীলনে, আবার কখনো টুর্নামেন্ট খেলতে দেশের বাইরে। গ্রামের সাধারণ মেয়ে সানজিদা আক্তারের কাছে অবসর এখন দুর্লভ হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে এবার ঈদে সব মিলে আট দিন ছুটি মেলে সানজিদার। জাতীয় দলের একজন নারী ফুটবলারের জন্য এটি বেশ বড় একটি অবসর। পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে গল্প আর আড্ডায় কাটানো ছুটি প্রায় শেষের দিকে। আগামী শুক্রবার আবারও ফিরে যাবেন বাফুফের আবাসিক ভবনে। শুরু হবে ফুটবল নিয়ে ব্যস্ততা। স্মৃতি হয়ে থাকবে ঈদের ছুটির আটটি দিন।

সানজিদা আক্তার ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুরের মেয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের মাধ্যমে ফুটবলে নাম লেখানো মেয়েটি এখন বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। গত সেপ্টেম্বর মাসে সাফ ফুটবলের শিরোপা জেতার পর আরও একবার আলোচনায় আসেন তিনি। গারো পাহাড়ঘেরা প্রত্যন্ত গ্রাম কলসিন্দুর থেকে উঠে আসা সানজিদা আক্তার পেয়েছেন তারকাখ্যাতি।

আরও পড়ুন

সানজিদা বলেন, এবার ঈদের তিন দিন আগে (১৯ এপ্রিল) ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে যান তিনি। মা–বাবা, ভাইবোন আর বোনের মেয়ের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চেয়েছেন। তবে বাড়িতে যাওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর দূরদূরান্তের আত্মীয়স্বজন এবং অনেক অপরিচিত মানুষ তাঁকে দেখতে আসেন। জাতীয় দলে খেলার কারণে টেলিভিশনে খেলা দেখে অনেকেই সানজিদার ভক্ত বনে গেছেন। সেসব ভক্তরা সানজিদাকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন।

সানজিদা আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

সানজিদা বলেন, ‘ঈদের দিন মায়ের পরিয়ে দেওয়া শাড়ি পরে ফেসবুকে ছবি দেওয়ার পর আমার বাড়িতে আসার খবরটি অনেকেই জানতে পারেন। এর পর থেকে প্রতিদিনই লোকজন দেখা করতে আসছেন।’

তারকাখ্যাতি পাওয়ার পর ঈদ কীভাবে কাটে জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, ‘ঈদে সবার জন্যই নতুন পোশাক কিনেছি। তবে নিজের জন্য নতুন পোশাক কেনা হয়নি এবার। সবাইকে ঈদে নতুন পোশাক কিনে দেওয়া খুবই আনন্দের। সময় পাইনি তাই নিজের জন্য নতুন পোশাক কিনতে পারিনি। তবে এ জন্য আক্ষেপ নেই। বাবা, মা আর ভাইবোনদের সঙ্গে কেটেছে ঈদের দিন। বড় বোনের সাত বছর বয়সী মেয়ে আনিকা আনজুমকে ঈদের আগেই নিজের কাছে নিয়ে এসেছি।’

সানজিদা বলেন, ঈদের দিন সকাল সাতটা বাজার আগেই মায়ের ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙে তাঁর। সকালে মায়ের হাতের তৈরি করা খাবার খেয়ে দিন শুরু হয়। এরপর ভাগনিকে সাজিয়ে দেন। মা জোছনা বেগম নিজের নতুন শাড়ি পরিয়ে সাজিয়ে দেন মেয়ে সানজিদাকে। ওই শাড়িতেই দিন কেটেছে তাঁর।

ছুটির দিনগুলোতেও একেবারে বিশ্রামে থাকতে চান না ফুটবলার সানজিদা। প্রতিদিন বিকেলে প্রতিবেশী ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ফুটবল খেলেন। বাচ্চারা মিলে এক দল। আর সানজিদা একা। এভাবে বেশ কিছু সময় ফুটবল খেলা চলে। সানজিদা বলেন, ‘বাচ্চাদের সঙ্গে খেলায় আমিও কয়েকটা গোল হজম করি। এতে বাচ্চারা খুব খুশি হয়।’