ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রী পারাপার

দোহারের পদ্মা নদীর মৈনট ঘাট থেকে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন রুটে স্পিডবোটে করে যেতে সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট।

কালবৈশাখীর মৌসুমে দোহারে মৈনট ঘাটে স্পিডবোটের যাত্রীরা লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন। গতকাল দুপুরে।
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার দোহারের পদ্মা নদীর মৈনট ঘাট থেকে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন রুটে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া স্পিডবোটে করে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় লোকজন যাতায়াত করছে। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। কালবৈশাখীর মৌসুম থাকায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আরও প্রবল।

যাত্রীদের অভিযোগ, স্পিডবোটের চালক লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা না রাখায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা পদ্মা নদী পারাপার হচ্ছেন। আর স্পিডবোটের চালকদের ভাষ্য, যাত্রীরা গরমের কারণে লাইফ জ্যাকেট না পরে হাতে নিয়ে বসে থাকেন।

মৈনট ঘাট থেকে চরভদ্রাসন রুটে স্পিডবোটে করে যেতে এখন সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। বর্ষার মৌসুমে সময় লাগে প্রায় আধা ঘণ্টা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মৈনট ঘাট এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাট এলাকা থেকে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রীরা স্পিডবোটে বসে আছেন। স্পিডবোটের চালক যাত্রী তুলতে হাঁকডাক দিচ্ছেন। এ সময় স্পিডবোটের যাত্রীদের পরনে লাইফ জ্যাকেট ছিল না। ঘাটের পাড়ে নোঙর করে রাখা বেশ কয়েকটি স্পিডবোটে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া দেখা যায়নি।

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন এলাকার বাসিন্দা ও স্পিডবোটের যাত্রী মনিরুল হক বলেন, ‘স্পিডবোটে উঠে দেখি চালক যাত্রীদের জন্য জ্যাকেট ও বয়া কিছুই রাখেনি। এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, এসবের দরকার নাই, কোনো সমস্যা হবে না। জরুরি কাজ থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে।

ফরিদপুর সদর এলাকার বাসিন্দা সোলায়মান মিয়া বলেন, পদ্মা নদীতে মাঝেমধ্যেই ছোট–বড় স্পিডবোট দুর্ঘটনা ঘটে। এরপরও স্পিডবোটে লাইফ জ্যাকেট রাখছেন না চালকেরা। তাঁরা যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করতে বাধ্য করছেন। লাইফ জ্যাকেট রাখার কথা বললে স্পিডবোট চালকেরা কর্ণপাতই করেন না। এসব বিষয়ে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি স্পিডবোটে কমপক্ষে ১৪-১৬ জন যাত্রী বহন করা হয়। তাঁদের জন্য লাইফ জ্যাকেট ও বয়াসহ জীবন রক্ষাকারী কোনো সরঞ্জাম রাখা হয় না। তবে ভিন্ন দাবি মৈনট ঘাটের স্পিডবোট–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। স্পিডবোট পরিচালক আবুল খায়ের বলেন, ‘প্রতিটি স্পিডবোটের চালককে বোট ছাড়ার আগে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে নেওয়ার জন্য বারবার বলা হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গরমের কারণে লাইফ জ্যাকেট না পরে হাতে নিয়ে বসে থাকেন। তাঁদের লাইফ জ্যাকেট পরার জন্য অনুরোধ করলেও তাঁরা কথা শোনেন না। আমরা আমাদের দিক থেকে চেষ্টা করে থাকি।’

দোহারের কুতুবপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মমিনুর রহমান বলেন, মৈনট ঘাট এলাকায় চলাচলকারী স্পিডবোটগুলোতে যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য নৌ পুলিশ নজরদারি রাখছে। এ ছাড়া স্পিডবোটের চালক ও যাত্রীদের সব সময় লাইফ জ্যাকেট পরার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কোনো অবস্থাতেই লাইফ জ্যাকেট পরিধান করা ছাড়া যাত্রীদের নদী পারাপার করা যাবে না। বিশেষ করে কালবৈশাখীর মৌসুমে স্পিডবোটের চালক ও যাত্রীদের আবহাওয়া পূর্বাভাস মেনে চলাচল করতে বলা হচ্ছে।