নরসিংদীতে প্রতিবেশীর আঙিনায় ময়লা পানি আসা নিয়ে বিরোধে ২ ভাই খুন
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় সোহাগ মিয়া (৪০) ও রানা মিয়া (৩৫) নামের দুই ভাইকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বাড়ির আঙিনায় ময়লা পানি আসা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশী চাচা এবং দুই চাচাতো ভাই এই জোড়া হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা। এ সময় নিহত দুজনের মা শামীমা আক্তারও আহত হন।
আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বৈলাব গ্রামে এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ভাই বৈলাব গ্রামের সাবেক সেনাসদস্য মো. আসাদুজ্জামানের ছেলে। অন্যদিকে এ জোড়া হত্যায় অভিযুক্ত তিনজন হলেন প্রতিবেশী চাচা মামুন মিয়া, তাঁর দুই ছেলে দিদার মিয়া ও বিদ্যুৎ মিয়া।
পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মামুন মিয়াদের বাড়ি কিছুটা উঁচু, আর সোহাগ মিয়াদের বাড়ি কিছুটা নিচু। এতে মামুন মিয়াদের বাড়ির শৌচাগারের ময়লাযুক্ত পানি ভুক্তভোগীদের আঙিনার ওপর দিয়ে যায় বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এ সমস্যার প্রতিকার চেয়ে আসছিলেন। কিন্তু সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল না।
আজ বুধবার সকালে সোহাগ ও রানা তাঁদের বাড়ির আঙিনায় নালা কেটে ওই ময়লা পানি এক জায়গায় জমা করার ব্যবস্থা করেন। এতে ময়লার দুর্গন্ধ ওই বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ছিল। বিকেলে কাজ থেকে ফিরে আসার পর মামুন মিয়া ও তাঁর দুই ছেলে দিদার এবং বিদ্যুৎ এ দৃশ্য দেখে রেগে যান। সন্ধ্যার দিকে রানা ও সোহাগ বাড়ি ফেরার পরই ছুরি হাতে মামুন, দিদার ও বিদ্যুৎ তাঁদের বাড়িতে যান। এ সময় তাঁরা অতর্কিত রানা ও সোহাগকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। দুই ভাই মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মামুন, দিদার ও বিদ্যুৎ পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে রাতে শিবপুর থানার পুলিশ দুই ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত দুই ভাইয়ের মা শামীমা আক্তার বলেন, মামুন, দিদার ও বিদ্যুৎ প্রথমে রানার পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। তাঁর চিৎকার শুনে সোহাগ এগিয়ে গেলে তাঁকেও এলোপাতাড়ি লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। সে মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করেন তাঁরা। ঘটনাস্থলেই রানা মারা যান। আহত অবস্থায় সোহাগকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চান তিনি।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসাইন বলেন, বাড়ির আঙিনায় ময়লা পানি আসার মতো তুচ্ছ ঘটনার জের ধরেই এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দুজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।