সড়কের উন্নয়নের জন্য কাটা হচ্ছে সহস্রাধিক গাছ

গাছগুলোর জরিপ মূল্য ধরা হয়েছিল ১৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।

টাঙ্গাইল-আরিচা মহাসড়ক সম্প্রসারণ করতে সড়কের দুই পাশের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। গতকাল দুপুরে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কাগমারী এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইল-আরিচা মহাসড়ক উন্নয়নকাজের জন্য পাশের ১ হাজার ৯টি গাছ কাটা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেক পুরোনো গাছও রয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলেন, সড়কের উন্নয়ন করা দরকার, আবার এত গাছ কাটলে পরিবেশেরও ক্ষতি হবে। ফলে যতটা সম্ভব গাছগুলো রক্ষা করে কাজ করা দরকার।

সওজ সূত্র জানায়, মানিকগঞ্জের বরাংগাইল থেকে টাঙ্গাইল শহর পর্যন্ত ৫৯ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কের উন্নয়নকরণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে টাঙ্গাইল অংশে পড়েছে ৪০ কিলোমিটার। এ প্রকল্পের আওতায় সড়কটি ১৮ ফুট থেকে বাড়িয়ে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণসহ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা।

টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওলিউল হোসেন জানান, টাঙ্গাইল-আরিচা সড়কের উন্নয়নকাজ শুরু হয়ে গেছে। এ কাজের জন্য গাছ কাটা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বৃক্ষ পালন বিভাগ ইতিমধ্যে দরপত্রের মাধ্যমে গাছ বিক্রি করেছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে ওই মহাসড়কের টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কাগমারী থেকে বালুচরা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, গাছ কাটার কাজ চলছে। কাগমারী সেতু পার হওয়ার পরই দেখা যায় একটি বটগাছের ওপরের অংশ কাটা হয়েছে। এখন চলছে গোড়া কাটার কাজ। এভাবে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় আম, জাম, কাঁঠাল, কড়ই, মেহগনিসহ বিভিন্ন জাতের গাছ কাটা হচ্ছে।

কাগমারী এলাকায় সন্তোষ ঘোষ পাড়ার তাপস কুমার ঘোষ বলেন, এ গাছগুলো বছরের পর বছর পথচারীদের ছায়া দিচ্ছে। রাস্তাটি শীতল থাকে এ গাছগুলোর জন্য। এর মধ্যে নানান প্রজাতির পাখিও বসে। এভাবে নির্বিচার গাছ কাটার ফলে পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা হবে।

একই এলাকার মনা সরকার বলেন, রাস্তাটি একদিকে প্রশস্ত করলে দুই দিকের গাছ কাটা পড়ত না। এতে উন্নয়নও হতো, পরিবেশের ক্ষতিও হতো কম।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের বৃক্ষপালন বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মুকুট আবু সাইদ বলেন, আরিচা-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল সড়কে ১ হাজার ৯টি গাছ কাটা হচ্ছে। গাছগুলোর জরিপ মূল্য ধরা হয়েছিল ১৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। সড়ক প্রশস্ত করার পর পুনরায় দুই পাশে গাছ লাগানো হবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ পৃথিবীর সাধারণ সম্পাদক শহীদ মাহমুদ জানান, সড়ক বিভাগ একটু সচেতন হলে অনেক পুরোনো গাছ রক্ষা করা সম্ভব হতো। এ দাবিতে তাঁরা আন্দোলন শুরু করবেন বলেও জানান তিনি।